কিসের আলামত: রাতের আঁধারে খালেদার সঙ্গে ফখরুলের সাক্ষাৎ

নিউজ ডেস্ক

নতুনের সাথে আমরা

প্রকাশিত : ০৩:৪২ পিএম, ১ মার্চ ২০২১ সোমবার

বেগম খালেদা জিয়া ও মির্জা ফখরুল ইসলাম

বেগম খালেদা জিয়া ও মির্জা ফখরুল ইসলাম

খুব বেশিদিন আগের কথা নয়। গত বছরের ২৫ মার্চ সরকারের মহানুভবতায় কারাগার থেকে মুক্তি মেলে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার। সে সময় তিনি বলেছিলেন, রাজনীতিতে আর সক্রিয় থাকবেন না। নিভৃতে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাবেন, চিকিৎসা গ্রহণ করবেন। কিন্তু তিনি কথা রাখেননি। ক’দিন যেতে না যেতেই সৌজন্য সাক্ষাতের নামে শুরু করেন গোপন রাজনৈতিক বৈঠক। তারই ধারাবাহিকতায় আবারও রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে তিনি দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও নিজের উপদেষ্টা আবদুস সালামের সঙ্গে ঘন্টাব্যাপী বৈঠক করেন।

বিশিষ্টজনদের অভিমত, হঠাৎ রাতের অন্ধকারে খালেদার বৈঠক মানেই এর নেপথ্যে কারণ রয়েছে। তাও আবার নিজের ঘনিষ্ঠজন ফখরুল-মোশাররফ-সালামদের সঙ্গে। বিষয়টি কিসের আলামত, তা ভাবার বিষয়। কারণ, দেশে বর্তমানে আল-জাজিরা, লেখক মুশতাকের মৃত্যুর মত ইস্যু চলমান। তাই বিএনপি নেত্রী যে, নিজেদের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এই গোপন বৈঠক করেননি, তার কী গ্যারান্টি!

দায়িত্বশীল সূত্রের তথ্যমতে, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সরকারের নির্বাহী আদেশে কারামুক্তি পাওয়ার পর থেকে রাজধানীর গুলশানের ভাড়া বাসা ‘ফিরোজা’য় অবস্থান করছেন। গত বছরের ২৫ মার্চের পর থেকে অদ্যাবধি নানান অজুহাতে, সৌজন্য সাক্ষাতের নামে তিনি নিজের ‘আস্থাভাজন’ নেতাকর্মীদের নিয়ে করছেন রাজনৈতিক আলাপন। গেটের দারোয়ানকেও বলে রেখেছেন এবং তালিকা দিয়ে রেখেছেন, তারা বৈ যেন অন্য কেউ ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে। রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতেও সেই ঘটনার ব্যত্যয় হলো না। দারোয়ানকে দিয়ে রাখা তালিকায় নাম থাকা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও আবদুস সালাম ‘ফিরোজা’র অভ্যন্তরে প্রবেশ করেন এবং ঘন্টাব্যাপী বৈঠক করেন।

কেন রাতের আঁধারে এই সাক্ষাৎ জানতে চাইলে বাংলা নিউজ ব্যাংককে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা মূলত ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) খোঁজ-খবর নিতে এসেছিলাম। পাশাপাশি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে দলের পক্ষ থেকে নেওয়া কর্মসূচির ব্যাপারে তার মতামত, পরামর্শ ও দিক নির্দেশনা নিতে এসেছিলাম। ছিল আরও কিছু বিষয়ে আলোচনা। যেগুলো এখনই বলতে পারবো না, নিষেধ আছে। তবে হ্যাঁ, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেগুলো প্রকাশ্য হবেই। ততক্ষণ পর্যন্ত ধৈর্য ধরে থাকুন। আর রাতের আঁধারে দেখা করতে এসেছি এই কারণে যে, ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) এই সময় ফ্রি থাকেন, নিরিবিলি থাকেন। দিনের বাকীটা সময়, কোন না কোন কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন।

তবে এ বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করছেন রাজনৈতিক বিজ্ঞজনরা। তাদের ভাষ্য, যখনই কোন ষড়যন্ত্র করা হয় কিংবা করে ব্যর্থ হয় বিএনপি। তখনই সৌজন্য সাক্ষাতের নামে রাজনৈতিক কথোপকথনের রূপরেখা আঁকেন চতুর খালেদা। এর আগেও তিনি এমনটা করেছেন। এবারও যখন আল-জাজিরা আর লেখক মুশতাকের মৃত্যু ইস্যুতে তাদের করা প্রোপাগান্ডা সাধারণ জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে, তখনই গোপন বৈঠকের ডাক দিলেন খালেদা। বুনতে শুরু করলেন নতুন ষড়যন্ত্রের জাল। তাই সরকারসহ আমাদের সবাইকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে যাতে, আবারও তারা কোনভাবেই দেশবিরোধী কোন অপপ্রচারে লিপ্ত না হতে পারে।