ক্ষতিগ্রস্থ জমি পরিদর্শনে কেন্দুয়ায় যান কৃষির সচিব ও ডিজি

নিউজ ডেস্ক

নতুনের সাথে আমরা

প্রকাশিত : ১২:১৫ পিএম, ৮ এপ্রিল ২০২১ বৃহস্পতিবার

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া গরম ঝড়ো হাওয়ায় তাণ্ডবে বোরো ফসলের জমিতে ‘হিট শক” হয়ে পুড়েছে ৩০২০ হেক্টর বোরো ফসলী জমি। রোববার (৪ এপ্রিল) বিকালে থেকে রাত সাড়ে ৯ পর্যন্ত চলে বৃষ্টিহীন এই তান্তব লীলা। বুধবার দুপুরে এসব ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা স্বচক্ষে দেখতে যান

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোঃ মেসবাহুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে ডিজি মোঃ আসাদুল্লাহ ও ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের ডিজি মোঃ শাহজাহান কবিরসহ বিভাগীয় ও জেলার কর্মকর্তারা।

এর আগে মঙ্গলবার বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) এর একটি বিশেষজ্ঞ বিজ্ঞানী দল এসে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের নানা পরামর্শ দেন ।
সুত্র জানায়, গত রোববার গরম ঝড়ো হাওয়ার পর সোমবার সকালে সূর্য্য ওঠার সাথে সাথে মাঠের বোরো ফসলের ধানে শীর্ষ সাদা হয়ে শুকিয়ে যেতে দেখতে পায় কৃষক। একে একে চারদিক থেকে ফসল জ্বলসে যাওয়ার খবর আসতে থাকে কৃষি অফিসে।

এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ ফেইসবুকেও বিভিন্ন এলাকায় আক্রান্ত হওয়ার ধানিজমির ছবি আপলোড দেয় নেটিজনরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়,চলতি বোরো মৌসুমে কেন্দুয়া উপজেলায় ২১ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমি আবাদ করা হয়। এরমধ্যে কান্দিউড়া ও মোজাফরপুর ইউপির হাওড়ে হাইব্রীড জাতের ১০০ হেক্টর ও উফশী জাতের ৯৩০ হেক্টর এবং বিল ও ছোট হাওড়ের ২০ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমির মধ্যে হাইব্রীড ২৭৫০ হেক্টর , উফশী ১৭৯৬৫ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ৩৫ হেক্টর আবাদ করা হয়েছে। বর্তমানে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ জমিতে ধানের শীর্ষ দিয়েছে। এরই মধ্যে প্রায় ১৫ শতাংশ জমির ধানেশীর্ষে আধাপাকা পর্যায়ে রয়েছে।

রোববার বিকাল থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত বয়ে যাওয়া গরম ঝড়ো হাওয়ার তাণ্ডবে উপজেলা জুড়ে বোরো ফসলের জমি হিট শকে ব্যাপক আক্রান্ত হয়েছে। হাওড়ের পর হাওড়েরের ফসলের মাঠ শুকিয়ে সাদা বর্ণ ধারণ করেছে। সকাল বেলায় কৃষক ক্ষেতে গিয়ে দেখতে পান ধানের শীর্ষগুলোর ক্রমেই সাদা হয়ে যাচ্ছে। স্বপ্নের ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়া কৃষকরা ক্ষেতের আলেই কান্না ভেঙ্গে পড়েন।
বাম্পার ফলনের অপেক্ষায় থাকা বিস্তীর্ণ মাঠের করুণ দশা প্রত্যক্ষ করে মর্মাহত হন তারা । ধানের ফুল ও দুধ অবস্থায় তাপ প্রবাহের দরুণ “হিট শক” হয়েছে বলে তারা প্রাথমিকভাবে মতামত প্রদান করেছেন ধান গবেষক প্রতিনিধি দল। যেসব ধান এখনো শীষ বের হয়নি অর্থাৎ বুটিং ও হেডিং স্টেজ এ আছে, সেগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন তারা। তাই ওই সকল স্টেজে থাকা ধানের ক্ষেতগুলোতে পর্যাপ্ত পানি ধরে রাখা এবং ম্যাজিক স্প্রে (১০ লিটার পানিতে ৬০ গ্রাম এমওপি সার, ৬০ গ্রাম থিওভিট ও ২০ গ্রাম চিলেটেড জিংক) জমিতে প্রয়োগ করতে পরামর্শ প্রদান করেছেন এই দলটি। এতে আক্রান্ত হওয়ার আশংকায় থাকা ধানগাছগুলো কিছুটা শক কাটিয়ে উঠতে পারবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞ এই দল।

উপজেলা কৃষি অফিসার একেএম শাহজাহান কবীর জানান, হিট শকে উপজেলার ৩ হাজার ২০ হেক্টর জমির ফসল বিনষ্ট হয়েছে। তবে এর পরিমাণ আবো বাড়তে পারে।

মঙ্গলবার বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) এর একটি বিশেষজ্ঞ বিজ্ঞানী দল ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন এবং বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন।

বুধবার কৃষি মন্ত্রণালয়ে সচিব ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহা পরিচালক ( জিডি) ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের ডিজি মহোদয়গণ পরিদর্শন করেছন। এবং ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তা করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান তিনি।