জ্যাকব টাওয়ার: বাংলার আইফেল টাওয়ার

ভ্রমণ ডেস্ক

নতুনের সাথে আমরা

প্রকাশিত : ১২:৫৪ পিএম, ৫ অক্টোবর ২০২১ মঙ্গলবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

বিশালাকর একটি টাওয়ার। দেখতে ঠিক যেন আইফেল টাওয়ারের মতো! একেবারে অবিকল নয়, তবে কিছুটা মিল আছে।

বিশালাকার এই টাওয়ারটি বাংলার আইফেল টাওয়ার হিসেবে সারাদেশে খ্যাতি লাভ করেছে। দিনে এমনকি রাতেও টাওয়ারের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভিড় জমায় দর্শনার্থীরা।

বাংলার আইফেল টাওয়ারটির নাম ‘জ্যাকব টাওয়ার’। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ভোলা দ্বীপের চরফ্যাশন শহরে অবস্থিত এটি। এটি আসলে একটি ওয়াচ টাওয়ার।

এ টাওয়ার থেকে চারপাশের ১০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। এটি বাংলাদেশ ও উপমহাদেশের সবচেয়ে উঁচু ওয়াচ টাওয়ার।

আইফেল টাওয়ারের আদলেই নির্মিত হয়েছে টাওয়ারটি। ১৬ তলাবিশিষ্ট এই ওয়াচ টাওয়ারে চড়ে সবাই চারপাশের সৌন্দর্য উপভোগ করেন।

এর প্রতি তলায় ৫০ জন দর্শনার্থীরা একসঙ্গে উপস্থিত থাকতে পারেন। আর পুরো টাওয়ারটি ৫০০ জন দর্শককে জায়গা দিতে প্রস্তুত।

ভোলা জেলা শহর থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে জ্যাকব টাওয়ারের অবস্থান। চরফ্যাশন কলেজ রোডের খাসমহল মসজিদের সামনে ওয়াচ টাওয়ারটি অবস্থিত।

যদিও নির্মাণের শুরুতে এর নাম জ্যাকব টাওয়ার ছিলো না। ভোলা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবের নাম অনুসারেই টাওয়ারটির নামকরণ করা হয়।

২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে এই টাওয়ার নির্মাণের কাজ শুরু হয়। জ্যাকব টাওয়ার নির্মাণে ব্যয় হয় প্রায় ২০ কোটি টাকা। এর উচ্চতা ২২৫ ফুট।

এক একর জমিতে টাওয়ার নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে চরফ্যাশন পৌরসভা। বাংলার আইফেল টাওয়ারে নকশা করেছেন স্থপতি কামরুজ্জামান লিটন।

সম্পূর্ণ ইস্পাতের তৈরি এই টাওয়ার ৮ মাত্রার ভূমিকম্প সহ্য করতে পারে। টাওয়ারের নিচ থেকে উপরের ওয়াচ পয়েন্ট পর্যন্ত চারদিকে অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ৫ মিলিমিটার ব্যাসের স্বচ্ছ কাঁচ বসানো আছে।

জ্যাকব টাওয়ারের চূড়ায় ওঠার জন্য সিঁড়ির পাশাপাশি আছে ক্যাপসুল লিফট। টাওয়ার চূড়ায় স্থাপন করা হয়েছে উচ্চক্ষমতার বাইনোকুলার।

এর সাহায্যে পর্যটকরা দূরবর্তী স্থানও অতি নিকটে দেখতে পারবেন। এখানে থেকে দেখা যায়, চর কুকরি-মুকরি, তারুয়া সৈকত, স্বপ্নদ্বীপ, চর পিয়াল, হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ ও বঙ্গোপসাগর।

একসঙ্গে দর্শনীয় এসব স্থান নিজ চোখে উপভোগ করতে অনেকেই ছুটে যান জ্যাকব টাওয়ারে। এক ছাদের নিচেই বাইনোকুলার দিয়ে দ্বীপ, সৈকত ও বঙ্গোপসাগর দেখা বেশ অবিশ্বাস্য বটে! চাইলে আপনিও জ্যাকব টাওয়ারে গিয়ে সেখানকার সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন।

কীভাবে যাবেন?

ভোলায় যেতে হলে অবশ্যই নদীপথ ধরতে হবে। ঢাকা লঞ্চ টার্মিনাল থেকে প্রতিদিনই চরফ্যাশনের উদ্দেশে লঞ্চ ছেড়ে যায়। এসব লঞ্চে সিঙ্গেল কেবিন পাওয়া যাবে ৮০০-১০০০ টাকায়। দু’জনের কেবিন ১৮০০-২০০০ টাকা।

লঞ্চের ডেক ভাড়া জনপ্রতি ২০০-২৫০ টাকা। লঞ্চঘাটে নেমে স্থানীয় পরিবহনে ৭০-৮০ টাকায় যেতে হবে চরফ্যাশন পৌরসভায়। সেখানে থাকা-খাওয়ার জন্য একাধিক আবাসিক হোটেল ও রেস্তোরাঁ আছে।