থাইল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক:

নতুনের সাথে আমরা

প্রকাশিত : ০২:৩৬ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ শনিবার

থাইল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ

থাইল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ

রুমানা আহমেদের চমৎকার ইনিংস ও রিতু মনির ক্যামিওর পরও পুঁজি খুব একটা বড় হলো না। তবে সেটাই যথেষ্ট বানিয়ে দিলেন সানজিদা আক্তার মেঘলা, সালমা খাতুনরা। তাদের দারুণ বোলিংয়ে থাইল্যান্ডকে হারিয়ে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জায়গা করে নিল বাংলাদেশ।

আবু ধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে শুক্রবার বিশ্বকাপ কোয়ালিফায়ার ম্যাচে ১১ রানে জিতেছে নিগার সুলতানার দল। ১১৩ রান তাড়ায় ১০২ রানে থেমেছে থাইল্যান্ড।

বাংলাদেশের ব্যাটারদের লম্বা একটা সময় পর্যন্ত হাত খুলতে দেননি থাইল্যান্ডের বোলাররা। তবে শেষ চার ওভারে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দলকে ১২০ রানের কাছে নিয়ে যান রুমানা ও রিতু।

রান তাড়ায় একাই লড়াই করেন নাথাকান চেনথাম। ৪৩ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়ে করেন ৬৪ রান। তার ৫১ বলের অসাধারণ ইনিংসটি গড়া তিন ছক্কা ও চারটি চারে।

দুর্দান্ত বোলিংয়ে স্রেফ ৭ রান দিয়ে দুটি উইকেট নেন সানজিদা। সালমা ৩ রান নেন ১৮ রানে।

মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে বাংলাদেশ ফিরে পায় অভিজ্ঞ ব্যাটার ফারজানা হককে। টস হেরে ব্যাটিং পাওয়ার পর মুর্শিদা খাতুনকে নিয়ে তিনিই ইনিংস উদ্বোধন করেন।

কোভিড-১৯ থেকে সেরে ওঠা ফারজানা ছিলেন মন্থর। দ্বিতীয় ওভারে চার বলের মধ্যে দুই বাউন্ডারি মেরে ঝড়ো শুরুর আভাস দেন মুর্শিদা। প্রথম ৬ বলে ১০ রান করা এই ওপেনারও পরে হয়ে যান মন্থর।

পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ মারতে পারেনি আর কোনো বাউন্ডারি। ব্যক্তিগত ৫ রানে ফারজানা জীবন পাওয়ায় হারায়নি কোনো উইকেট। ৬ ওভারে রান তুলতে পারে কেবল ২৭।

সপ্তম ওভারে ফানিতা মায়াকে বাউন্ডারি মেরে গা ঝাড়া দেওয়ার আভাস দেন ফারজানা। তবে সেই ওভারেই ক্যাচ দিয়ে তিনি ফিরে গেলে ভাঙে ৩৪ রানের শুরুর জুটি।

ক্রিজে গিয়েই চার মেরে রানের খাতা খোলেন নিগার। প্রথম ১০ বলে বাংলাদেশ অধিনায়ক করেন ১০ রান। পরে মন্থর হয়ে যান তিনিও।

এর মধ্যেই রান আউট হয়ে ফিরে যান শেষ দিকে রানের জন্য ভোগান্তিতে পড়া মুর্শিদা। ৩৫ বলে দুটি চারে তিনি করেন ২৬। তার শেষ ১৬ রান আসে ২৯ বলে!

দুই ওভার পর নিগারও (২৪ বলে ১৭) বিদায় নিলে বিপদ বাড়ে বাংলাদেশের। রানের গতিতে দম দিতে পারেনিন সোবহানা মুস্তারি।

১৬ ওভারে বাংলাদেশের রান ছিল কেবল ৭৪। ১৩ বলে ৭ রানে ব্যাট করছিলেন রুমানা। রিতুকে নিয়ে তিনিই দলকে এনে দেন লড়াই করার মতো সংগ্রহ।

১৯তম ওভারে বেরিয়ে এসে ছক্কা মারেন রুমানা। এক বল পর রিতুর ব্যাট থেকে আসে চার। সেই ওভারের শেষ বলে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান এই অলরাউন্ডার। পরের ওভারের প্রথম দুই বলে মারেন দুটি চার। কিন্তু শেষ চার বল থেকে বাংলাদেশ নিতে পারে কেবল একটি সিঙ্গেল। সেটাও রিতুর ক্যাচ ফিল্ডার নিতে না পারায়।

শেষ বলে রান আউট হওয়া রিতু তিন চারে ১০ বলে করেন ১৭। ২৮ বলে এক ছক্কা ও দুই চারে ২৮ রানে অপরাজিত থাকেন রুমানা। তাদের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে শেষ ৪ ওভারে ৩৯ রান তোলে বাংলাদেশ।

রান তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি থাইল্যান্ডের। তৃতীয় ওভারে ওনিচা কামচুমফুকে ফিরিয়ে শুরুর জুটি ভাঙেন সালমা খাতুন।

পঞ্চম ওভারে তিন বলের মধ্যে দুটি উইকেট নিয়ে থাইল্যান্ডকে বড় একটা ধাক্কা দেন সানজিদা আক্তার মেঘলা। নানাপাত কোনচারোয়েনকাইকে বোল্ড করার পর বাঁহাতি স্পিনার এলবিডব্লিউ করে দেন নাতায়া বুচাথামকে।

বাংলাদেশের আঁটসাঁট বোলিংয়ে প্রথম ৮ ওভারে কেবল ১৬ রান তুলতে পারে থাইল্যান্ড। দলের এমন মন্থর শুরুর পর একাই লড়াই করা চেনথাম এক-দুই নিয়ে খেলার পাশপাশি সুযোগ পেলে মারেন বাউন্ডারি।

শেষ ৩ ওভারে যখন ৫১ রান প্রয়োজন, তখন ১৮তম ওভারে রুমানাকে ওড়ান পরপর দুই ছক্কায়। ওভার থেকে আসে ১৬ রান। পরের ওভারে দুই ব্যাটার নেন ১৩ রান।

শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ২২ রান। সালমার প্রথম ৪ বলে ১০ রান নিয়ে গাণিতিকভাবে সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখেন চেনথাম। তবে মেলাতে পারেননি ২ বলে ১২ রানের সমীকরণ। চেনথামের পর রোসেনান কানোহকেও বোল্ড করে দেন সালমা।

অন্য কোয়ালিফায়ারে জিম্বাবুয়েকে ৪ রানে হারিয়ে আগামী বছর দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত করেছে আয়ারল্যান্ড।

আগামী রোববার ফাইনালে তাদের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ নারী দল: ২০ ওভারে ১১৩/৫ (ফারজানা ১১, মুর্শিদা ২৬, নিগার ১৭, রুমানা ২৮*, মুস্তারি ৬, রিতু ১৭; বুচাথাম ৪-০-২৬-০, সুথিরুয়াং ১-০-৯-০, কানোহ ৪-০-১৩-১, মায়া ২-০-১৪-১, কামচুমফু ৪-০-১৫-১, পুথাওং ৪-০-২৭-০, তিপোচ ১-০-৬-০)

থাইল্যান্ড নারী দল: ২০ ওভারে ১০২/৬ (কোনচারোয়েনকাই ১০, কামচুমফু ২, চেনথাম ৬৪, বুচাথাম ০, চাইওয়াই ১২, সুথিরুয়াং আহত অবসর ৩, তিপোচ ১০*, কানোহ ০; সালমা ৪-০-১৮-৩, নাহিদা ৪-০-২৫-১, সানজিদা ৪-১-৭-২, রুমানা ৪-১-২৫-০, সোহেলি ৩-০-১৭-০, রিতু ১-০-১০-০)

ফল: বাংলাদেশ নারী দল ১১ রানে জয়ী

প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: নাথাকান চেনথাম