ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

অস্ট্রেলিয়ায় চুয়েটের তিন গবেষক পাচ্ছেন ডিনস অ্যাওয়ার্ড

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:০২, ১০ নভেম্বর ২০২০  

ডিনস অ্যাওয়ার্ডের জন্য নির্বাচিতরা হলেন ড. সাইয়েদুল মুরসালিন, ড. সুমনা বিশ্বাস ও ড. আহসানুল হাবীব

ডিনস অ্যাওয়ার্ডের জন্য নির্বাচিতরা হলেন ড. সাইয়েদুল মুরসালিন, ড. সুমনা বিশ্বাস ও ড. আহসানুল হাবীব

গবেষণায় কৃতিত্বপূর্ণ সফলতার জন্য অষ্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলস (ইউএনএসডব্লিউ) থেকে ডিনস অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছেন বাংলাদেশি তিন শিক্ষার্থী। তারা চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) সাবেক শিক্ষার্থী। স্নাতক শেষে তিনজনই অষ্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন। 

ডিনস অ্যাওয়ার্ডের জন্য নির্বাচিতরা হলেন ড. সাইয়েদুল মুরসালিন, ড. আহসানুল হাবীব এবং ড. সুমনা বিশ্বাস। ড. সায়েদুল মুরসালিন ইউএনএসডব্লিউ, সিডনি এবং বাকি দুজন ইউএনএসডব্লিউ, ক্যানবেরা ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী ছিলেন। 

ড. মুরসালিন জানান, ২৪ আগস্ট ইউএনএসডব্লিউ এর নিজস্ব ওয়েবসাইটে এবং মেইলযোগে শিক্ষার্থীদের এসব নাম প্রকাশ করা হয়। তবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে কোনো সমাবর্তনের আয়োজন করেনি। 

পাওয়ার সিস্টেম অথবা পাওয়ার গ্রিডের যেসব যন্ত্রপাতির (ট্রান্সফর্মার, ক্যাবল সংযুক্ত তার) একটি নষ্ট হয়ে গেলে পুরো সিস্টেমের উপর প্রভাব ফেলে। যেমন লোডশেডিং, ব্লাক আউট ইত্যাদি। এসব নষ্ট যন্ত্রপাতি খুলে ঠিক করে নতুন করে লাগানো যেমন কষ্টসাধ্য তেমনই ব্যয়বহুলও। কিন্তু কম মানের কম্পাংক প্রয়োগ করে পাওয়ার সিস্টেমে সংযুক্ত এসব যন্ত্রপাতি পরীক্ষামূলক চেক করা যায়, এতে খরচ কমার সঙ্গে সঙ্গে সিস্টেমে পাওয়ার লসও কম হয়। গুরুত্বপূর্ণ এই কম কম্পাংক প্রয়োগের মাধ্যমে সিস্টেমের যন্ত্রপাতি কতোদিন টিকবে তাও জানা যায়। এমন কম ফ্রিকুয়েন্সি কিভাবে একটি পাওয়ার সিস্টেমে কাজ করে তার পুরো বিষয়টি গবেষণা করেছেন ড. মুরসালিন।

ড. সাইয়েদুল মুরসালিন চুয়েটের তড়িৎকৌশল বিভাগের ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার থিসিসের শিরোনাম ছিল Diagnostic measurement and modelling of Electrical insulation Based on very low frequency high voltage Excitation.

এ দিকে ড. আহসান হাবিব চুয়েটের তড়িৎকৌশল বিভাগের ২০০৫-০৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গবেষণা সম্পর্কে জানতে চাইলে বলেন- আমার পিএইচডি থিসিসের শিরোনাম ছিলো Efficient Algorithms for Computationally Expensive Optimization Problems. লক্ষ্য ছিলো গণনামূলকভাবে অত্যন্ত ব্যয়বহুল Optimization সমস্যার জন্য এমন দক্ষ এলগরিদম তৈরি করা যারা খুব অল্পসংখ্যক ব্যয়বহুল ডাটা ব্যবহার করেও উচ্চমানসম্পন্ন সমাধান প্রদানে সক্ষম। 

ডিনস অ্যাওয়ার্ড অর্জন সম্পর্কে ড. আহসানুল জানান, তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক কৌশলের ছাত্র হওয়ায় কম্পিউটার বিজ্ঞান সম্পর্কিত পিএইচডি যাত্রাটি প্রাথমিকভাবে আমার জন্য খুব বেশি সুখকর ছিল না। এলগরিদম ও কম্পিউটার বিজ্ঞানের নানা বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে আমার প্রাথমিকভাবে অনেক সময় লেগে যায়। যে কারণে নির্ধারিত সময়ের বেশ কিছুদিন পর আমি থিসিস জমা দিতে সক্ষম হই। স্কলারশিপ পরবর্তী ও থিসিস জমাদান পূর্ববর্তী সেই সময়টি আমার জন্য বেশ সংগ্রামের ছিলো।

অন্যদিকে ড. সুমনা বিশ্বাস চুয়েটের ২০০০-০১ শিক্ষাবর্ষের যন্ত্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। ডিনস পদক অর্জন সম্পর্কে তিনি জানান- আমার পিএইচডি যাত্রাটি খুব বেশি সুখকর ছিল না। একেতো বিদেশ, যেখানে সবকিছু নিজেকে একহাতে সামলাতে হয় তার উপর আমার দেড় বছরের ছেলে, সব মিলিয়ে খুব কঠিন সময় গেছে। তবে আমার স্বামী, বাবা, বোন, ভগ্নিপতি, সর্বোপরি আমার পরিবারের অসামান্য সমর্থন, আমার চুয়েট, রুয়েটসহ সব পরিচিতদের সাহায্য এবং আমার ছেলের আত্মত্যাগ- সবকিছু মিলিয়ে যাত্রাটার সফলতা সম্ভব হয়েছে। 

ড. সুমনার পিএইচডি থিসিসের সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার থিসিসের শিরোনাম ছিল Real-time Path Planning (Mission Planning) for a Swarm of Autonomous Systems. থিসিস এর মূল বিষয়বস্তু হলো চালকবিহীন একগুচ্ছ স্বয়ংক্রিয় গাড়ির সফল মিশন পরিচালনা। কিভাবে চালকবিহীন একগুচ্ছ স্বয়ংক্রিয় গাড়ি, তাদের মধ্যে কোনো রকম সংঘর্ষ ছাড়া এবং পথে কোনো রকম বাধা থাকলে তাকে সংঘর্ষ ছাড়া অতিক্রম করে কম সময়ে গন্তব্য পৌঁছেতে পারে।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়