ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪ ||  চৈত্র ১৪ ১৪৩০

ঐতিহ্যের অজপাড়া গাঁ

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪:৪৪, ১৯ এপ্রিল ২০২১  

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

আড়াই শত বছরের সন্ধ্যার আঁধার নামে এ গাঁয়ে
দিনগুলোর পৌনঃপুণিকতায় প্রজন্ম বদলায়,
অথচ বদলায়নি বটতলার সেই ইতিহাস।

অশ্বথের শিকড়ে বাধা ডিঙিগুলো চিরসাক্ষী হয়ে রয়,
ঐতিহ্যের এই অজপাড়াগাঁখানি তো আজকের নয়!

দূর গ্রামের মোড়লের সওদা আর শ্রম শেষে 
কৃষকের আহারের বিকিকিনি,
এ গাঁয়ে আসত কতশত বাণিজ্য ডিঙি। 

কয়েকটি শতবছর প্রতিনিধিত্ব করে জানালো 
ডিঙি বাঁধা ঘাটের সেই সনাতনী গ্রামখানি; 
আধুনিক অথচ কতটা প্রাগৈতিহাসিক!

নগেনের উত্তরাধিকারী গরুগুলো 
এখনো ঘাস খায় গোধূলী বেলায়,
চেনা মেঠো পথ ধরে নীড়ে ফেরে অবলীলায়
তারপর, অনেক দিনের পর ইতিহাস বদলায়
নলখাগড়ার বন কবেই হয়েছে বিলীন!

পাকা সড়কের অন্তরালে কর্দমাক্ত মেঠো পথ আজ আর নেই।
বিল কিনারে এখনো পূর্ব পাড়ার প্রথম সকালে সূর্য ওঠে
অথচ এ গাঁয়ে সেইসব ডিঙি আর আসে না,
নতুন প্রজন্ম আসে, ভুলে যায় এ গাঁয়ের অতীত।

ব্যস্ত কলকাতার জীবন সংগ্রামী এক সাহিত্যিক ;
একদা এখানে হয়েছিলেন ভূমিষ্ট,
তাকে আজ পঁচিশ জুলাই ছাড়া কেউ মনে করে না!
অথচ অধুনা বাঙালি মধ্যবিত্ত শ্রেণিতে
সে ছিল এই গ্রামের একচ্ছত্র প্রতিনিধি।

সাহিত্যের সৃষ্টিশীলতা কখনো মরতে পারে না, মনোজ দা!
তোমাকে একদিন ফিরিয়ে আনব এ গাঁয়ে।
হোক না শত বছর পর 
তাও তোমাকে চিনবে, এই মা মাটি ও মানুষ
তোমার বাংলা তোমার নিশিকুটুম্ব পড়ে শিহরিত হবে,
বিল কিনারের উড়ে চলা সাদা বকগুলি দেখে 
আবার কিশোরীর বুকে দূরুদূরু নেমে এসে পণ করবে 
এবারের গোপন কথাটি সে আর কাউকেই সহসা কইবে না।

কর্পোরেট শহুরে মেগপাই জীবনে কত কোলাহল
সন্ধ্যা নামলে এক টুকরো শান্তির খোঁজে হই বিহ্বল
স্মৃতির পাতায় হাতড়ায়
সেখানে তোমাকে ছাড়া কিছু দেখি না।
তুমি তো আর কেউ নও
তুমি আমারই জন্মভূমি, তুমি আমারই ডোঙ্গাঘাটা।

১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ডোঙ্গাঘাটা থেকে।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়