ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪ ||  চৈত্র ১৪ ১৪৩০

ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্প গড়ে তোলার তাগিদ দিলেন প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২০:০৪, ৫ ডিসেম্বর ২০২১  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

আরও উদ্যােক্তা তৈরি করা দরকার মন্তব্য করে দেশে বড়ো শিল্পের পাশাপাশি ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্প গড়ে তোলার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

রোববার (৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে নবম জাতীয় এসএমই পণ্য মেলা-২০২১ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ১৯ মাস বিরতির পর বার্ষিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করলো এসএমই ফাউন্ডেশন। মেলা চলবে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রথমবারের মতো ১০টি ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) মেলায় অংশ নিচ্ছে। পাশাপাশি জাতীয় এসএমই পণ্য মেলায় সারাদেশ থেকে বাছাইকৃত তিনশ’ এসএমই প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে, যাদের প্রায় ৬০ শতাংশ নারী  উদ্যোক্তা।

মেলার উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বড় শিল্পের পাশাপাশি আমাদের ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্প গড়ে তোলা দরকার। যাতে করে একদিকে যেমন কর্মসংস্থান বাড়বে অপর দিকে মানুষ স্বল্প পুঁজি দিয়ে কিছু উৎপাদন করতে পারবে, বাজারজাত করতে পারবে, আর্থিকভাবে সফলতা অর্জন করতে পারবে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছি। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সমগ্র বাংলাদেশে যাতে এই শিল্পায়নটা হয়। তার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা ইতিমধ্যে আমরা নিয়েছি। আমাদের লক্ষ্য যে দেশটাকে আমাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে এবং শিল্পখাতে আমাদের উন্নতি করতে হবে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে যে দারিদ্র বিমোচন, মানুষের আয় বৃদ্ধি করা, দারিদ্রের হাত থেকে এই দেশের মানুষকে মুক্ত করা। পাশাপাশি আমাদের নারী সমাজ, তারাও যেন অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছলতা অর্জন করতে পারে। যেটা তার সংসারের কাজে লাগবে আবার দেশেরও কাজে লাগবে। এভাবে নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টির জন্য আমরা অনেক পদক্ষেপ নিয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর সময়কালে দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের শিল্পায়ন হয়। ক্ষুদ্র কুটির শিল্পও তার আমলে। কৃষির সঙ্গে দেশে যে শিল্পায়ন প্রয়োজন, সেটা তার সময়ই উপলব্ধি। মানুষের আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ২১ বছর পর যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে তখন থেকে শিল্পায়নের ব্যাপারে ব্যাপক উন্মুক্ত হয়। ১৯৯৬ সালে বেসরকারি খাতকে উন্মুক্ত করা হয়। দেশে মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি জায়গা কম। কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও স্বল্প পুঁজি দিয়ে যাতে মানুষ চলতে পারে সে জন্য উদ্যােগ নেয়া হয়। সারা দেশে যাতে শিল্পায়ন হয় সেটা দেখা হচ্ছে। সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে, দারিদ্র্য বিমোচন, মানুষের হাতে টাকা পৌঁছানো, নারীর ক্ষমতায়ন। ২০০৮ সালে সরকার যখন ক্ষমতায় আসার পর ২০২১ সহ আরও বেশ কিছু লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

পুরুষ উদ্যােক্তাদের প্রতি আহবান রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা তো ব্যবসা করছেন। এর পাশাপাশি লাইসেন্স নিয়ে এসএমই ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে ঘরের নারীদের এই খাতে আনুন। সংসার সুখের হবে।

আয়োজক সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রদর্শনীতে যেসব পণ্য থাকবে তার মধ্যে রয়েছে পাট, পাটজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, হস্তশিল্প, বেতের পণ্য, মৃৎশিল্প, সিরামিক, কৃত্রিম ফুল, গয়না, বুটিকস, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, জামদানি, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ ইত্যাদি। লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, প্লাস্টিক, ইলেকট্রনিক ও ইলেকট্রিক্যাল, এগ্রো মেশিনারি এবং আইটি ও কুরিয়ার সেক্টরের পণ্যও থাকবে মেলায়।

এ ছাড়াও আট দিনব্যাপী মেলায় অর্থায়ন প্রক্রিয়া, নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন, প্রযুক্তি উন্নয়ন এবং ৪র্থ শিল্প বিপ্লব এবং ক্লাস্টার উন্নয়নের ওপর চারটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বিশেষ অতিথি শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন জাতীয় এসএমই পুরস্কার ২০২১ বিজয়ী চার উদ্যোক্তার হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও চেক তুলে দেন।

বিশেষ অতিথি এবং আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা, এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন এবং এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন ড. মো. মাকসুদুর রহমান বক্তৃতা করেন। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা থাকবে।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়