খুলনায় একটি বিরল প্রজাতির হলুদ সাপ উদ্ধার
নিউজ ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত
খুলনার দীঘলিয়া থেকে একটি হলুদ রঙের সাপ উদ্ধার করেছে বন বিভাগ। দিঘলিয়ার লাখোহাটি গ্রাম থেকে সাপটিকে উদ্ধার করে ‘আলোর মিছিল’ নামে স্থানীয় একটি পরিবেশবাদী সংগঠন। পরে তারা সাপটিকে বন বিভাগে হস্তান্তর করে।
সাপটি উদ্ধারকারী আলোর মিছিলের সভাপতি শেখ তারেক বলেন, দিঘলিয়ার লাখোহাটি গ্রামের দুই যুবক একটি বিরল প্রজাতির সাপ ধরেছে, আমরা এমন খবর জানতে পেরে সেখানে যাই এবং সাপটি উদ্ধার করে বন বিভাগে হস্তান্তর করি।
সাপটি বর্তমানে খুলনা বন্যপ্রাণী রেসকিউ সেন্টারে আছে। সেটি দেখাশোনা করছেন বাংলাদেশ অ্যান্টিভেনম গবেষণা কেন্দ্রের সহকারী গবেষক বোরহান বিশ্বাস রমন।
তিনি জানান, এটি মূলত একটি চেকার্ড কিলব্যাক (Checkered Keelback) বা জলঢোঁড়া সাপ। এই প্রজাতির সাপ হলুদ-কালো রঙের মিশ্রণের হলেও এই সাপটি অ্যালবিনো বা লুটিনোর প্রভাবে হলুদ হয়েছে। এটি একটি পুরুষ সাপ।
তিনি বলেন, প্রাণীদের মধ্যে অ্যালবিনোর প্রভাবে প্রচুর সাদা প্রাণী দেখা গেলেও লুটিনোর প্রভাবে সাপের রং বদলের ঘটনা খুব কম। লুটিনোর প্রভাবে রং বদলেছে এমন সাপ আগে দেশে পাওয়া যায়নি। এর রং যদি লুটিনোর কারণে বদলায় তবে এটি দেশে প্রথম। হতে পারে অ্যালবিনোর প্রভাব আছে, আবার অ্যালবিনোর মাত্রা কমবেশি হওয়ার কারণে এমন হয়েছে। বিস্তারিত জানতে ডিএনএ টেস্ট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
বাংলাদেশ বন বিভাগের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা ও তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা জানান, সাপটি দেখে অ্যালবিনো Albino Checkered Keelback বা অ্যালবিনিজমে আক্রান্ত জলঢোঁড়া বলেই মনে হচ্ছে। অ্যালবিনিজম হলো প্রাণীর বংশগতিজনিত পরিবর্তন বা ত্রুটি যা চোখ, ত্বক বা চামড়ার স্বাভাবিক রংকে বিবর্ণ বা অন্য রঙে বদলে দেয়। অ্যালবিনিজমে আক্রান্ত প্রাণীর ক্ষেত্রে টাইরোসিন নামে একটি এনজাইমের অনুপস্থিতির কারণে ত্বকে এ ধরনের পরিবর্তন দেখা যায়।
তিনি বলেন, ২০১৯ সালের ২৫ ডিসেম্বর পাবনা সদরের আতাইকুলা থেকে একটি সাদা রঙের একটি অ্যালবিনো সাপ উদ্ধার করেছিল ‘নেচার অ্যান্ড ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন কমিউনিটি’ নামের একটি সংগঠনের সদস্যরা। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় জানা যায় সেটি আসলে অ্যানবিনিজমে আক্রান্ত জলঢোঁড়া। খুলনার সাপটিকেও অ্যালবিনিজমে আক্রান্ত জলঢোঁড়া বলে মনে হচ্ছে। তবে এ ধরনের প্রাণীর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরই চূড়ান্ত মন্তব্য করা উচিত।
জোহরা মিলা বলেন, তবে একটি বিষয় বলা প্রয়োজন যে, অ্যানবিনিজমে আক্রান্ত প্রাণীর দেখা পাওয়া খুব একটা সহজ নয়। কেননা অনেক ক্ষেত্রেই এই ধরনের প্রাণীরা প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগেই মারা পড়ে। মূলত ভিন্ন রঙের হওয়ার কারণে অ্যানবিনিজমে আক্রান্ত প্রাণীরা শিকারি বা বন্যপ্রাণী পাচারকারীদের কাছে বেশি আকর্ষণীয় হয়ে থাকে। তাই স্বাভাবিক রঙের প্রাণীদের চেয়ে অ্যানবিনিজমে আক্রান্ত প্রাণীদের জীবনের ঝুঁকিও বেশি।
এদিকে, জলঢোঁড়া সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জলঢোঁড়া একটি নির্বিষ সাপ। এটি পুকুর-ডোবা, খাল-বিলসহ ছোট-বড় জলাশয়ে প্রায়ই দেখা যায়। সাপটির শরীরে হলুদ-কালো রঙের মিশ্রণে ছোপ ছোপ দাগ থাকে। এটি ১৫০ থেকে ১৬০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা। জলঢোঁড়া ছোট মাছ, ব্যাঙ, ইঁদুর, ছোট পাখি, গিরগিটিসহ নানা ক্ষতিকর পোকামাকড় ও কীটপতঙ্গ কৃষকের উপকার করে এবং প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করে। তবে বর্তমান সময়ে পুকুর-ডোবাসহ জলাভূমি দূষণ ও ভরাট হয়ে যাবার ফলে বাসস্থান হারাচ্ছে সাপটি। এছাড়া কৃষি জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ ও মানুষের হাতে প্রচুর জলঢোঁড়ার মৃত্যু হয়। এভাবে দিন দিন প্রাণীটি হুমকির মুখে পড়ছে।
- ময়মনসিংহ বোর্ডের প্রথম এসএসসি পরীক্ষায় পাশ ৮০.১৩ শতাংশ
- ময়মনসিংহে কেওয়াটখালী সেতুর জন্য ২৬০ মিলিয়ন ডলার ঋণ বরাদ্দ
- ভালুকায় শিল্পপতির পা কেটে নেওয়ায় প্রধান আসামীসহ চার জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব
- ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার ফজলুল কবির
- রাজধানীর ১৫ থানায় আনসার-ভিডিপির ত্রাণ বিতরণ
- আম্ফানের তাণ্ডবে রাজশাহীতে ঝরে গেছে ২০ শতাংশ আম
- নৌকা চালিয়ে ও টিউশনি করে জিপিএ-৫ পেয়েছে শাপলু
- পটুয়াখালীতে নির্মিত হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ১২ সেতু
- মারা গেলেন মুক্তিযোদ্ধা প্রলয় মৈত্র
- নরসুন্দর, রঙমিস্ত্রী ও কর্মহীন ১০০ জনকে জেলা প্রশাসনের সহায়তা