ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

চট্টগ্রামে বসল দেশের প্রথম ইনসিনারেটর প্ল্যান্ট

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:১২, ১৩ জানুয়ারি ২০২২  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় প্রথমবারের মত ‘ইনসিনারেটর প্ল্যান্ট’ স্থাপন করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, যার মাধ্যমে বন্দরনগরীতে দৈনিক উৎপাদিত তিন মেট্রিক টনের মত চিকিৎসা বর্জ্য ‘পরিবেশসম্মতভাবে’ পোড়ানো সম্ভব হবে। তাতে পরিবেশ দূষণ কমবে এবং মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় এতদিনের অব্যস্থপানার অবসান ঘটার পথ তৈরি হবে বলে আশা করছেন কর্মকর্তারা।

হালিশহর আনন্দবাজার এলাকায় এই ইনসিনারেটর প্ল্যান্ট উদ্বোধন করে মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নতুন যুগের সূচনা করল।

“এখন সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান থেকে মেডিকেল বর্জ্য সংগ্রহ করা হবে। যাতে করে কেউ নালায় খালে বা উন্মুক্ত স্থানে আর মেডিকেল বর্জ্য না ফেলে।”

মেয়র কলেন, সংক্রমাক মেডিকেল বর্জ্য নিষ্কাশনে গুরুত্ব দিয়ে এই প্ল্যান্ট বসানো হয়েছে।

সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল, ডায়গনস্টিক সেন্টারগুলোকে তাদের মেডিকেল বর্জ্য যত্রতত্র না ফেলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গাইডলাইন অনুসরণ করে অটোক্লেভ মেশিনের মাধ্যমে জীবাণুমুক্ত করে নির্ধারিত ব্যাগে ভরে বর্জ্য সংগ্রহকারীদেরকে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

ইনসিনারেটর প্ল্যান্ট স্থাপনে সহযোগিতা করায় জাপান সরকার, জাইকা এবং সে দেশের জনগণকে ধন্যবাদ জানান মেয়র রেজাউল।  

তিনি বলেন, মহামারীর এই সময়ে যেভাবে মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে, তাতে এ ভাইরাসের সংক্রমণ মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এছাড়া শিল্প বর্জ্যের কিছু অংশ ভাগাড়ে এবং কিছু নালানর্দমার মাধ্যমে নদী-সমুদ্রে গিয়ে পড়ে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র হুমকির সম্মুখিন হচ্ছে।

“মেডিকেল বর্জ্যরে পাশাপাশি শিল্পবর্জ্য ও ইলেকট্রনিক বর্জ্য সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন হতে হবে। প্ল্যান্টটিতে মেডিকেল বর্জ্য পোড়ানো হবে পরিবেশ সম্মত উপায়ে। এতে পরিবেশ দূষণ রোধ হবে।”

জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি অনুষ্ঠানে বলেন, “চট্টগ্রামের উন্নয়নের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেসব পরিকল্পনা নিয়েছেন সেগুলো বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম হবে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম অর্থনৈতিক হাব। জাপান চট্টগ্রামের উন্নয়নে অনেক সহযোগিতা করেছে, সেই সহযোগিতা আগামীতেও অব্যাহত রাখা হবে।”

নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনতে এই প্ল্যান্ট ‘যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে’ বলে আশা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রদূত।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মলয় চৌধুরী বলেন, “মেডিকেল বর্জ্য বিশোধনে সিসিসি দেশে প্রথম এই প্ল্যান্ট স্থাপন করল, যা অভিনন্দনযোগ্য প্রয়াস। আগামীতে চট্টগ্রাম একটি পরিবেশবান্ধব নগরী হিসেবে গড়ে উঠবে।”

জাইকার চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ হাইয়াকাওয়া ইয়োহো বলেন, “এই প্ল্যান্টে পরিবেশসম্মত উপায়ে উচ্চ তাপমাত্রায় ধোঁয়াবিহীন চুল্লির মাধ্যমে বর্জ্য বিশোধন করবে। এটি পরিচালনায় জাইকার বিশেষজ্ঞ টিম কাজ করবে এবং সিটি করপোরেশনের কর্মীদের প্রশিক্ষিত করে গড়ে তোলা হবে।”

এই ইনসিনারেটরে ঘণ্টায় ২০০ কেজি মেডিকেল বর্জ্য পোড়ানো সম্ভব। জৈব বর্জ্য পুড়িয়ে ছাইয়ে পরিণত করা হবে, পরে তা মাটিচাপা দেওয়া হবে।  এতদিন চট্টগ্রাম সেবা সংস্থা (সিএসএস) নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নগরীর ১৬৩টি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করত। ১৬৩টি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়গনেস্টিক সেন্টারে দৈনিক উৎপাদিত প্রায় দেড় টন বর্জ্য সংগ্রহ করা হত। 

সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমের সভাপতিত্বে ও প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সবুর হোসেন, জাইকার সিনিয়র রিপ্রেজেন্টেটিভ সাইকি তাকাশি, প্যানেল মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন, আফরোজা কালাম, কাউন্সিলর মো. আব্দুল মান্নান, অধ্যাপক মো. ইসমাইল, মো. ইলিয়াস, সচিব খালেদ মাহমুদ, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম প্রমুখ।

আরও পড়ুন
সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়