ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

চোখের জলে প্রকৌশলী আলী আশরাফকে বিদায়

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬:০২, ৭ মার্চ ২০২১  

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা, যানজট কিংবা উড়াল সড়ক। যেকোনো সমস্যায় সবার আগে যে মানুষটির সুচিন্তিত মতামতের অপেক্ষায় থাকত চট্টগ্রামের মানুষ, সেই প্রকৌশলী আলী আশরাফকে আজ চোখের জলে বিদায় জানিয়েছে চট্টলাবাসী। তিনি আর কখনোই চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসনে বা অপরিকল্পিত উন্নয়ন নিয়ে উচ্চকিত হবেন না প্রেসক্লাবে বা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে। চিরদিনের মত ফিরে যাচ্ছেন ফটিকছড়ির জাফতনগরে; যেখান থেকে এসে ভালোবেসেছিলেন এই শহরকে।

রোববার (৭ মার্চ) বাদ জোহর নগরের জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ প্রাঙ্গণে তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় অংশ নিয়ে শেষবারের মত ইঞ্জিনিয়ার আলী আশরাফকে দেখতে এসেছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। এ সময় মসজিদ প্রাঙ্গণে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

মরহুমের প্রথম নামাজে জানাজায় ইমামতি করেন জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ আল্লামা মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ অছিয়র রহমান।

জানাজায় অংশ নেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ এম. রেজাউল করিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম, চসিকের সাবেক প্রশাসক ও নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরসেদুল আলম সুজন প্রমুখ।

জানাজা-পূর্ব বক্তব্যে বক্তারা বলেন, প্রকৌশলী আলী আশরাফ ছিলেন চট্টগ্রামের একজন নিবেদিত প্রাণ শুভাকাঙ্ক্ষী। চট্টগ্রামের যেকোনো সংকটে তিনি নিজের অভিজ্ঞতার ডালি খুলে সহযোগিতার চেষ্টা করেছেন। যান্ত্রিক এই সময়ে এমন অন্ত-প্রাণ মানুষ পাওয়াই দুষ্কর। চট্টগ্রামের উন্নয়ন, নগর পরিকল্পনা, অবকাঠামো, পরিবহন, জলাবদ্ধতা, পাহাড় কাটা, পাহাড় ধস, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পরিবেশ সংকট ও পরিবেশ দূষণ, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, পর্যটন এমন কোনো বিষয় নেই যে বিষয়ে প্রকৌশলী আলী আশরাফ তার সুচিন্তিত মতামত উপস্থাপন করেননি। অধ্যাপক ইঞ্জিনিয়ার আলী আশরাফ তার অভিজ্ঞতা ও পুরকৌশলের দৃষ্টিকোণ থেকে বরাবরই এই চট্টগ্রামের উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রেখেছেন। চট্টলাবাসী তাদের এই সন্তানকে সারাজীবন মনে রাখবে।

তার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ফেব্রুয়ারিতে করোনায় আক্রান্ত হন ইঞ্জিনিয়ার আলী আশরাফ। চিকিৎসাধীন ছিলেন চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে। তার অবস্থার অবনতি হলে ১৭ ফেব্রুয়ারি তাকে নেয়া হয় ঢাকার এভার কেয়ার হাসপাতালে। অবস্থা আরও সংকটাপন্ন হলে ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে তাকে রাখা হয় আইসিইউতে। সেখানেই শনিবার দিবাগত রাত ২টা ৫ মিনিটে তিনি ইন্তেকাল করেন। ফটিকছড়ির জাফতনগর লতিফ রহমান হাইস্কুল ময়দানে বাদ মাগরিব মরহুমের দ্বিতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

ইঞ্জিনিয়ার আলী আশরাফ ফটিকছড়ি নিবাসী মরহুম অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ নুরুল হুদার বড় ছেলে। তিনি মা ও শিশু হাসপাতালের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও অনারারী প্রজেক্ট ডিরেক্টর, সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সাবেক সভাপতি ও রোটারি সেন্টারের আজীবন সদস্যসহ বহু সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়