ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪ ||  চৈত্র ১৪ ১৪৩০

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:০৭, ১৭ জুলাই ২০২১  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। বল হাতে স্বাগতিকদের নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছে টাইগাররা।

লাল সবুজদের বেঁধে দেওয়া ২৭৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১২১ রানে অল আউট হয়েছে জিম্বাবুয়ে। ফলে বাংলাদেশ পেয়েছে ১৫৫ রানের বড় জয়। এই জয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল টাইগাররা।

জিম্বাবুয়ের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন ওয়েসলে মাধেভেরে ও তাদিওয়ানশে মারুমানি। ইনিংসের দ্বিতীয় ও নিজের প্রথম ওভারেই আঘাত হানেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। তার বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে কোনো রান না করে সাজঘরে ফেরেন মারুমানি। 

পঞ্চম ওভারে দ্বিতীয় আঘাত হানেন তাসকিন আহমেদ। তিনি বোল্ড করেন ৯ রান করা মাধেভেরেকে। এরপর ১৮ রান করা ডিওন মেয়ার্সকে আউট করেন শরিফুল ইসলাম।

ক্যারিয়ারের ২০০তম ওয়ানডে খেলতে নামা টেলর ও রেগিস চাকাভা মিলে বিপর্যয় সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু টেলরকে ২৪ রানের বেশি করতে দেননি সাকিব আল হাসান। 

কোনোমতে দলীয় শতক পার করার পর ব্যাটিং ধসের সম্মুখীন হয় জিম্বাবুয়ে। ১০৫ থেকে ১০৭ রানে যেতেই হারায় ৩ উইকেট। জঙ্গেকে মাঝে রান আউট করেন আফিফ হোসেন। এর আগে পরে রায়ান বার্ল ও মুজারাবানিকে ফেরান সাকিব।

জিম্বাবুয়ের শেষ দুই উইকেটও নেন সাকিব। শেষ উইকেট হিসেবে গারাভাকে আউট করার মাধ্যমে ম্যাচে ৫ উইকেট শিকারের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। 

এর আগে শুক্রবার হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেলর। বাংলাদেশের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। মুজারাবানির বলে কোনো রান না করেই ক্যাচ আউট হন তামিম। এর মাধ্যমে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ডাকের মালিক হয়েছেন তিনি।

ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এ নিয়ে ১৯তম বারের মতো শূন্য রানে আউট হয়েছেন তামিম। যা বাংলাদেশের পক্ষে ওয়ানডে ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশিবার শূন্য রানে আউট হওয়ার রেকর্ড। শুধু তাই নয়, তিন ফরম্যাট মিলিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ডাকের মালিক এখন এই ওপেনার।

একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এতদিন ধরে তামিম ইকবাল ও হাবিবুল বাশার সুমনের সমান ১৮টি ডাক ছিল। এছাড়া তিন ফরম্যাট মিলে সমান ৩৩টি করে ডাক ছিল তামিম ও মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার।

শুক্রবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে শূন্য রানে আউট হয়ে দুইটি রেকর্ড থেকেই বাশার ও মাশরাফীকে মুক্তি দিয়েছেন তামিম। তিন ফরম্যাট মিলে তামিমের শূন্যের সংখ্যা এখন ৩৪টি।

তামিমের জায়গায় নেমে নিজের প্রথম বলেই চার হাঁকিয়ে ভালো শুরু ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি। মুজারাবানির বলে কাট শট খেলতে গিয়ে রায়ান বার্লের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনে নামা এই অলরাউন্ডার। করেন ২৫ বলে ১৯ রান।

দুই উইকেট যাওয়ার পর ক্রিজে আসেন মোহাম্মদ মিঠুন। বলের সঙ্গে তাল রেখেই রান করছিলেন তিনি। তবে ১৯ রানের বেশি করতে পারেননি। টেন্ডাই চাতারার বলে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে আউট হন এই ব্যাটসম্যান। 

দলে দীর্ঘদিন পর সুযোগ পেয়ে জায়গা পাকা করার সুযোগ পেয়েছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। তবে সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ তিনি। গারাভার বলে সাজঘরে ফেরার আগে মাত্র ৫ রান করেন সৈকত। 

দ্রুত ৪ উইকেট হারানোর পর লিটন-রিয়াদের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। দুজনে মিলে গড়েন ৯৩ রানের জুটি। বাংলাদেশ যখন ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার অপেক্ষায়, তখনই আউট হন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

লুক জঙ্গের বলে পুল করতে গিয়ে উইকেটের পিছনে ক্যাচ তুলে দেন রিয়াদ। স্লোয়ার বলটি বুঝতেই পারেননি তিনি। ৫২ বলে ৩৩ রানের ইনিংস খেলেন সাইলেন্ট কিলারখ্যাত এই অলরাউন্ডার।

এর কিছুক্ষণ পর মাধেভেরের বলে গ্লান্স করে ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি পূরণ করেন একপ্রান্ত আগলে খেলতে থাকা লিটন দাস। ৭৮ বলে ফিফটির পর থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন তিনি। সেঞ্চুরি পূরণে এরপর খেলেন মাত্র ৩২ বল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এটি তার তৃতীয় শতক।

তবে সেঞ্চুরিকে বেশিদূর এগিয়ে নিতে পারেননি লিটন। শতকের পরপরই গারাভার বলে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। দীর্ঘদিন পর রানে ফেরা ইনিংসে তার সংগ্রহ ছিল ১০২। 

শেষদিকে ক্রিজে ঝড় তোলেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। হাফ সেঞ্চুরির সম্ভাবনা দেখা দিলেও ৪৫ রানে আউট হন তিনি। খেলেন মাত্র ৩৫ বল। পরপর দুই বলে আফিফ ও মিরাজকে ফেরান জঙ্গে। তার হ্যাটট্রিকের সুযোগ পাওয়া বলে রান আউট হন তাসকিন আহমেদ।

শেষদিকে ৬ বলে ৮ রানে অপরাজিত থাকেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। জিম্বাবুয়ের হয়ে জঙ্গে ৩টি, গারাভা ও মুজারাবানি দুটি করে উইকেট শিকার করেন। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৭৬/৯

(তামিম ০, লিটন , সাকিব ১৯, মিঠুন ১৯, মোসাদ্দেক ৫, মাহমুদউল্লাহ ৩৩, আফিফ ৪৫, মিরাজ ২৬, সাইফ ৮, তাসকিন ১, শরিফুল ০; মুজরাবানি ১০-২-৪৭-২, চাতারা ১০-১-৪৯-১, এনগারাভা ১০-১-৬১-২, জঙ্গুয়ে ৯-০-৫১-৩, বার্ল ৫-০-৩১-০, মাধেবেরে ৬-০-৩৭-০)।

জিম্বাবুয়ে: ২৮.৫ ওভারে ১২১

(মাধেবেরে ৯, মারুমানি ০, টেইলর ২৪, মায়ার্স ১৮, চাকাভা ৫৪, বার্ল ৬, জঙ্গুয়ে ০, মুজরাবানি ২, চাতারা ২*, এনগারাভা ০, মারুমা আহত অনুপস্থিত; তাসকিন ৫-০-২২-১, সাইফ ৪-০-২৩-১, সাকিব ৯.৫-০-৩০-৫, শরিফুল ৬-০-২৮-১, মিরাজ ৩-০-১৫-০, মোসাদ্দেক ১-০-১-০)।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়