জ্বালানি হিসেবে বিমানে কেরোসিন ব্যবহার করার কারণ
ফিচার ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত
আপনি কি জানেন- বিমান কোন তেলে চলে? জেনে অবাক হবেন বিমান চলে কেরোসিনে। কি, অবাক হচ্ছেন তাই না? আমরা সবাই জানি বিমান চলে জেট ফুয়েলে। কিন্তু এই জেট ফুয়েল কোন আলাদা জ্বালানি নয়। বরং এটা হচ্ছে জেট অ্যা-ওয়ান (Jet A-1) কেরোসিন।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে কেন বিমান চলে কেরোসিনে? কেন এতে কেরোসিন ব্যবহার করা হয়?
জ্বালানি হিসেবে বিমানে কেরোসিন ব্যবহার করার পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে।
কেরোসিন তরল থেকে বরফ হতে যে তাপমাত্রার প্রয়োজন হয় সেটা হচ্ছে -৪০ ডিগ্রি থেকে -৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিমান যখন ভূমি থেকে আকাশের অনেক উঁচুতে উঠে যায় তখন কেরোসিনের বদলে যদি গ্যাসোলিন ব্যবহার করা হয় তাহলে তা জমে বরফ হয়ে যাবে। আর এ জন্যই জেট অ্যা-ওয়ান কেরোসিন ব্যবহার করা হয় বিমানে।
কেরোসিনের ফ্ল্যাশ পয়েন্ট গ্যাসোলিনের তুলনায় অনেক বেশি। ফ্ল্যাশ পয়েন্ট হচ্ছে সেই তাপমাত্রা যেখানে দাহ্য কোনো পদার্থ জ্বলে উঠে এবং বাষ্পে রূপান্তরিত হয়। মূলত বিমানের আকাশে উড়া এবং দ্রুত গতি অর্জনের জন্য ফ্ল্যাশ পয়েন্ট অনেক জরুরি।
আর কেরোসিনে অকটেনের পরিমাণ বেশি থাকায় গ্যাসোলিনের চেয়ে দ্রুত গতি অর্জনে সাহায্য করে।
কেরোসিন গ্যাসোলিনের তুলনায় অনেক বেশি পাতলা এবং মোলায়েম।
মূলত ঘন কোনো জ্বালানি যদি বিমানে ব্যবহৃত হয় তাহলে সেই জ্বালানি বিমানের ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশের কার্যকরী ক্ষমতা অনেকটা কমিয়ে দিতে পারে।
অন্যদিকে কেরোসিন কম ঘনত্ব এবং অনেক পাতলা হওয়ার কারণে অনেক উচুতে ঠান্ডা আবহাওয়ায় যাওয়ার পরেও জমে যায় না। যে কারণে কেরোসিন বিমানের ইঞ্জিনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশের সঙ্গে পুরোপুরিভাবে খাপখাইয়ে নিতে পারে।
সাধারণত বিমানের জ্বালানি অনেক বেশি লাগে। সেক্ষেত্রে গ্যাসোলিন অত্যন্ত ব্যয়বহুল। আর খরচ কম হওয়ার কারণে গ্যাসোলিনের বদলে এখন প্রায় সব বিমান চলে কেরোসিনে।
এবার প্রশ্ন হচ্ছে কেরোসিন দিয়ে বিমান চালানোর পরেও বিমানে এত ভাড়া কেন?
যে সব বিমান খুব দূরে যাতায়াত করে তার অধিকাংশ বিমানই বোয়িং-৭৪৭। আর এই বিমানগুলো সাধারণত ভূমি থেকে প্রায় ৩৫ হাজার ফুট উপরে উড্ডয়ন করে থাকে। এসব বিমানে প্রতি ৪ সেকেন্ডে এক লিটার করে তেল খরচ করে। একটা বোয়িং ৭৪৭ বিমানে একবারে দুই লাখ ৩৮ হাজার ৬০৪ লিটার তেল নিয়ে যাত্রা করে।
এখন ভেবে দেখুন একটা সাধারণ প্রাইভেট কার তিন থেকে চারজন মানুষ বসতে পারে। আর ঘণ্টায় ৪ লিটার তেল পুড়িয়ে মাত্র ২৫ মাইল যেতে পারে।
আর অপরদিকে একটা বিমান ৫৫০ মাইল পাড়ি দেয়। তাই এর জন্য খরচা তো একটু বেশি পোহাতেই হবে।
আরো একটি ব্যাপার হচ্ছে, বিমান নিজে নিজে চালু হতে পারে না। আমরা অনেকেই হয়ত টিভি, ভিডিও বা সিনেমায় দেখেছি বিমানে একটি উড়োজাহাজ যখন রানওয়েতে দাড়িয়ে থাকে তখন পাশেই একটা ছোট গাড়ির সঙ্গে সংযুক্ত তারের মতো একটা কিছু থাকে যা বিমানের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। অনেক মানুষ ভাবেন যে ছোট্ট ওই গাড়ি দিয়ে আসলে বিমানে তেল ঢুকানো হয়। কিন্তু এটা সত্য নয়।
একে মূলত বলা হয় এভিয়েশন গ্র্যান্ড পাওয়ার ইউনিট। আসলে বিমান যখন রানওয়েতে থাকে তখন তার দুটি ইঞ্জিনই বন্ধ থাকে। আর এই ইঞ্জিনগুলো চালু করতে প্রয়োজন বিদ্যুৎ প্রবাহের, যা সরবরাহ করে ওই ছোট্ট গাড়িটি।
অদূর ভবিষ্যতে বিমান চলবে কোন শক্তিতে?
আগে একসময় গ্যাসেলিনের সাহায্যে বিমান চলতো। আর এখন বিমান চলে কেরোসিনে। তাহলে প্রশ্ন থেকেই যায় অদূর ভবিষ্যতে অন্য কোন শক্তি দিয়ে বিমান চলবে?
কেরোসিন কিংবা গ্যাসোলিন দুইটিই আসলে পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। আর তাই পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ব্যবহারের চিন্তা করছেন বিজ্ঞানীরা। এ জন্য সৌরশক্তি চালিত বিমান চালনা নিয়ে চলছে গবেষণা। আর এই গবেষণার সাফল্যও পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এমন গবেষণার ফসল হিসেবে বিশ্বের প্রথম সৌরচালিত বিমান সোলার ইমপালস হাওয়াই থেকে ক্যালিফোর্নিয়া যাওয়ার পথে প্রশান্ত মহাসাগর পাড়ি দেয়।
- করোনায় আক্রান্ত হলেই আলো জ্বলবে মাস্কে
- শূন্য থেকে জনপ্রিয়, মা-মেয়ের সফল উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প
- দীর্ঘতম জাতীয় পতাকা বানিয়ে গিনেস বুকে বাংলাদেশের ইমরান
- অনলাইন মাধ্যমে সার্টিফিকেট সংশোধন করার উপায়
- শহীদ শেখ জামাল : সেনাবাহিনীর গর্বিত সন্তান
- নম্বর প্লেটের কোন বর্ণের কী অর্থ?
- দুঃখিত ড. জাফরুল্লাহ, আপনার উদ্দেশ্য মহৎ নয়
- বিশ্বসেরা ধনী ব্যক্তিদের অর্ধাঙ্গিনীরাও নিজ কর্মগুণে প্রতিষ্ঠিত
- বিশ্বের সফল ব্যক্তিরা ঘুমানোর আগে যা করেন
- ‘কন্যা শিশু দিবস’এলো যেভাবে