ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

তারেকের চক্ষুশূল, তাই ‘বঙ্গবন্ধু বন্দনায়’ মশগুল ফখরুল

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:৪৫, ১ মার্চ ২০২১  

তারেক রহমান ও মির্জা ফখরুল ইসলাম

তারেক রহমান ও মির্জা ফখরুল ইসলাম

একে একে সব পথ বন্ধ হয়ে গেছে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের। তারেক রহমানকে দলের সর্বেসর্বা ভেবে তিনি তার সান্নিধ্য লাভের আশায় ছিটকে পড়েছেন খালেদা জিয়ার সুনজর থেকেও। সিঁকেভাগ যাও সম্ভাবনা ছিলো, তাও ভেস্তে গেছে তার সাম্প্রতিক সিঙ্গাপুর যাত্রাসহ নানান বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে। দলের অন্যান্য নেতাকর্মীরাও তাকে ভালো চোখে দেখছেন না।

গুঞ্জন উঠেছে, পরবর্তী কাউন্সিলে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীই হতে যাচ্ছেন পরবর্তী মহাসচিব। সবকুল হারিয়ে তাই ‘কুলহারা কলঙ্কিনী’র মত এখন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বন্দনায় মেতেছেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা। ভাবছেন, সরকারের সুদৃষ্টি তার উপর পড়লেও পড়তে পারে। কিন্তু সে আশায় গুঁড়ে বালি। কারণ, সরকারসহ আপামর সাধারণ জনগণও জানেন নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য সবকিছু করতে পারেন বিএনপি নেতারা।

নির্ভরযোগ্য সূত্রের তথ্যমতে, দলে যখন নিজের অবস্থান তলানিতে এবং গ্রহণযোগ্যতাও শূন্যের কোঠায় তখনই ভিন্নপথে হাঁটার পরিকল্পনা নিলেন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার এক সময়ের তুমুল আস্থাভাজন নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার সঙ্গে সখ্যতার কারণে লন্ডনে পলাতক ফেরারি আসামি তারেক রহমানের চক্ষুশূলে পরিণত হন তিনি। পরে খোলস বদলে তারেক ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টাও করেন তিনি। এমনকি এক ভার্চুয়াল বৈঠকে তারেককে দলের চেয়ারম্যান হিসেবেও সম্বোধন করেন। এতে ‘আহত পাখি’র মতো মর্মাহত হন খালেদা। পরবর্তীতে তার গুডবুক থেকে সরে যায় ফখরুলের নাম।

কিন্তু ফখরুলের সেই চাটুকারিতাও বেশিদিন দীর্ঘ হয়নি। সব কিছু পাশ কাটিয়ে তারেকের ‘ডান হাত’ খ্যাত রুহুল কবির রিজভী দলের পরবর্তী জাতীয় কাউন্সিলে নিজের মহাসচিব পদ পাকাপোক্ত করেছেন। আর সেই খবর ইতোমধ্যে এসে পৌঁছেছে ফখরুলের কানে। অন্যান্য নেতাদেরও বশ করে ফেলেছেন রিজভী। সবাই তার পক্ষেই সাফাই গাইছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও বর্তমান বিএনপির নিয়ন্ত্রক তারেক রহমানের কাছে। একইসঙ্গে নিন্দাও করছেন ফখরুলের নামে। মনঃক্ষুণ্ণ হয়ে তাই এক বুক অভিমান নিয়ে এই জ্যেষ্ঠ নেতা এখন সরকারের অনুকম্পা পেতে নতুন ফন্দি এঁটেছেন।

তারই অংশ হিসেবে শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) এক মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণকে খাটো করে দেখে না বিএনপি। তার এই কথার পরপরই দলের অন্যান্য নেতারা বিষয়টি তারেক রহমানের কানে দিয়েছেন। এতে বেজায় চটেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। এর জন্য ফখরুলকে কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে বলেও কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

এ বিষয়ে দেশের রাজনৈতিক বিজ্ঞজনরা বলছেন, বিএনপির অনাগত ভবিষ্যৎ অনুজ্জ্বল। তাই সাপের মত খোলস বদলে ফখরুল চাইছেন সরকারের নজরে আসতে। কিন্তু সেটা কখনোই সম্ভব নয়। বরং এর মাধ্যমে তার ‘আম-ছালা’ দু’টোই হারানোর সম্ভাবনা শতভাগ। তার মতো দলীয় আদর্শচ্যুত সুবিধাভোগীদের সম্পর্কে সরকারের পাশাপাশি আমাদের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে, যাতে কোনভাবেই তারা দেশেরে কোনরূপ ক্ষতি না করতে পারেন।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়