ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

দু’টি নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত হেফাজত

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬:৩৯, ১৬ মে ২০২১  

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে অন্তত দু’টি নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনের যোগাযোগের প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে যে তাণ্ডব চালানো হয়েছে, তার পেছনে মদদ যুগিয়েছে হেফাজতে ঢুকে পড়া উগ্রবাদীরাই। পুলিশ কর্মকর্তারা আরও জানান, সরকার পতনের পরিকল্পনা নিয়েই সংগঠনটিতে ঢুকেছে জঙ্গিরা।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতায় নেমে দেশের বিভিন্ন স্থানে তাণ্ডব চালায় হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা। এরপরই গ্রেপ্তার হতে থাকে সংগঠনটির গুরুত্বপূর্ণ নেতারা। তদন্তে উঠে আসছে অরাজনৈতিক হেফাজতের রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ পূরণে জঙ্গিদের সঙ্গে গোপন আঁতাতের।

নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের এক সময়কার সদস্যরা হেফাজতে ঢুকে গড়ে তুলেছেন ‘মানহাজি’ নামের একটি দল। এই দলের সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন হেফাজতের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, সহকারী মহাসচিব হাসান জামিল, প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া নোমান ফয়েজী, শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক হারুন ইজহার, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইদরিস, সহকারী দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাকুন্নবী কাসেমী, মারকাজুল হুদা আল ইসলামীর মহাপরিচালক আজহারুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর হেফাজতের সদস্য মুজিবুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন।

পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, এই দলের সদস্যদের বেশ কয়েকজনই আফগান ফেরত যোদ্ধা। সরকারের পতন ঘটানোই তাদের মূল লক্ষ্য।

পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক মো. আনোয়ার হোসেন জানান, হারুন ইজহার এবং জাকারিয়া নোমান ফয়েজী ইতিমধ্যে দু’টি মামলায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মোদী বিরোধী আন্দোলন চলাকালে তাণ্ডব ও সহিংসতায় যেসব ব্যক্তির ইন্ধন ও উস্কানি ছিলো তাদের নাম প্রকাশ করেছেন এ দুই হেফাজত নেতা।

ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের যুগ্ম-কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, ‘হেফাজতের সঙ্গে বেশকিছু জঙ্গিগোষ্ঠীও ঘোনা পানিতে মাছ শিকারের ফায়দা নেয়ার চেষ্টা করেছে।’

হরকাতুল জিহাদের পাশাপাশি ‘আনসার আল ইসলাম’র সঙ্গেও যোগাযোগ রয়েছে হেফাজতে ইসলামের। নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনটির আধ্যাত্মিক গুরু আলী হাসান ওসামা সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়ার পর গোপন সম্পর্কের বিষয়টি বেরিয়ে আসে।

হেফাজতের ভেঙে দেয়া কমিটির আমির জুনায়েদ বাবুনগরীর হাতে হাত রেখে বায়াত নেন ওসামা। হেফাজত ও আনসার আল ইসলামের সম্পর্কের খুঁটিনাটি উদঘাটনে তদন্ত করছে কাউন্টার টেরোরিজম।

ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে তারা হেফাজতের ধ্বংসাত্ত্বক কার্যকলাপের প্রতি অনেককেই আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেছে। এ থেকেই আমরা যোগসূত্র পাই।’

হেফাজত নেতা মামুনুল হকের জঙ্গি সংশ্লিষ্টতাও খতিয়ে দেখছে কাউন্টার টেরোরিজম। বিশেষ করে তার পাকিস্তানকেন্দ্রিক যোগাযোগ এবং মধ্যপ্রাচ্য থেকে অর্থ সংগ্রহ নিয়ে তদন্ত চলছে। হেফাজত জানিয়েছে, জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা ও নাশকতায় জড়িতদের বাদ দিয়ে নতুন কমিটি করতেই আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে।

হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির নায়েবে আমির আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী জানান, তারা একটি বিতর্কমুক্ত কমিটি করতে চান। সেজন্য যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ বা যাদের নিয়ে বিতর্ক আছে তাদের দলে রাখতে চান না।

চাপের মুখে এখন আত্মশুদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়ে সরকারের সঙ্গে দেন-দরবার চালিয়ে যাচ্ছে হেফাজত। তবে, সরকারের সাফ কথা, পার পাবে না অন্যায়কারীরা।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়