ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

নাটোরে চাষ হচ্ছে ব্ল্যাক রাইস

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:৫৫, ১৬ ডিসেম্বর ২০২১  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

নাটোরে চাষ হচ্ছে বেশি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ব্ল্যাক রাইস। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ফ্লাভিনয়ের্ড খুব বেশি পরিমাণে থাকায় এই চালের রঙ কালো হয়। কালো চাল ডায়াবেটিস, স্নায়ুরোগ ও বার্ধক্য প্রতিরোধক। এতে ভিটামিন, ফাইবার ও মিনারেল রয়েছে।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চীনে চতুর্দশ শতক থেকে সপ্তদশ শতকে মিং যুগে এই ব্ল্যাক রাইস বা কালো ধানের চাষ হতো। কিন্তু রাজা বা রাজপরিবার ছাড়া কারও এই কালো চালের ভাত খাওয়ার অধিকার ছিল না। প্রজাদের জন্য এই চাল নিষিদ্ধ ছিল বলে এই চালকে বলা হয় নিষিদ্ধ চাল বা ফরবিডেন রাইস। কালের বিবর্তনে জাপান ও মিয়ানমারে এই ধানের চাষ শুরু হয়। এরপর থাইল্যান্ডে শুরু হয় এর চাষাবাদ। সেখান থেকে এই ধানের চাষ শুরু হয় বাংলাদেশে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে তা সীমাবদ্ধ ছিল পাহাড়ি অঞ্চলে। পার্বত্য এলাকায় এই চালকে বলা হয় পোড়া বিন্নি চাল।

নাটোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মাহমুদুল ফারুক ও সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মেহেদুল ইসলাম বলেন, ‘সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর-খোলাবাড়িয়া ইউনিয়নের গাজীপুর বিলে চাষ হয়েছে ব্ল্যাক রাইস। স্থানীয় কৃষি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান অর্গানিক পল্লী অ্যাগ্রো ফার্মস অ্যান্ড নার্সারির পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান টুটুল কৃষি বিভাগের সহায়তায় এই ধানের চাষ করেছেন।

সরেজমিনে গাজীপুর বিলে দেখা যায়, কৃষক ও উদ্যোক্তা টুটুল তার এক বিঘা জমিতে চাষ করেছেন ওই ব্ল্যাক রাইস। দেখা যায়, অন্য ধানগাছের মতো হলেও ব্ল্যাক রাইস ধানের শীষের কিছু ধানের রঙ কালো। তবে শীষের আকৃতি তুলনামূলক বড়। ধানের খোসা সরিয়ে দেখা যায়, চালগুলোর রঙ কালো।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা পর্যবেক্ষণ করছেন ব্ল্যাক রাইস মোস্তাফিজুর রহমান টুটুল জানান, তিনি ময়মনসিংহ থেকে ওই ধানের এক কেজি বীজ সংগ্রহ করেছিলেন। সব খরচসহ তার এক বিঘায় ব্যয় হয়েছে ১৩ হাজার টাকা।

ফলন সম্পর্কে জানতে চাইলে মাহমুদুল ফারুক ও মেহেদুল ইসলাম জানান, জমির অতিরিক্ত রস থাকায় ধানগাছগুলো আগেই পড়ে গিয়েছিল। ফলে কিছুটা চিটা হয়েছে। তবে তাদের পরীক্ষালব্ধ ফলাফল অনুযায়ী ওই জমিতে প্রায় ১১-১২ মণ ধান পাওয়া যাবে। যা শুকানোর পর ১০ মণে টিকবে। গড়ে প্রতি মণে ২৫ কেজি চাল হলেও মোট ২৫০ কেজি চাল পাওয়া যাবে। যার বাজারমূল্য সর্বনিম্ন ১৫০ থেকে ২০০ টাকা হিসেবে ৩৭৫০ থেকে ৫ হাজার টাকা। এতে স্বাভাবিক ধান করার চেয়ে লাভ অনেক বেশি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মাহমুদুল ফারুক জানান, কালো চাল সাধারণ চালের তুলনায় অনেক বেশি উপকারী ও স্বাস্থ্যসম্মত। তুলনামূলক বিচারে অ্যানথোসায়ানিন, প্রোটিন ও ফাইবার অন্যসব চালের থেকে কালো চালে বেশি থাকে। চালে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রচুর থাকায় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ত্বক পরিষ্কার করে ও শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করে শরীরকে ফুরফুরে রাখে।

আরও পড়ুন
সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়