ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় মাশরুম চাষ করে সফল দুই সহোদর

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:১৮, ৩১ জানুয়ারি ২০২২   আপডেট: ১১:২০, ৩১ জানুয়ারি ২০২২

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

মাশরুম চাষ করে দুই সহোদরের মুখে হাসি ফুটেছে। দুই সহোদরের মধ্যে মিনহাজউদ্দিন আহমেদ (২১) ও মিরাজউদ্দিন আহমেদ (১৮)। নেত্রকোনার কেন্দুয়ার এই দুই তরুণ পড়ালেখার পাশাপাশি নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে করেছেন মাশরুম চাষ। উন্নতমানের বীজ ও প্রশিক্ষণ পেয়ে উপজেলার রোয়াইলবাড়ি আমতলা ইউনিয়নের আমতলা গ্রামে চাষ করেন মাশরুমের। এতে এই দুই সহোদর এবার সাফল্যের মুখও দেখছেন।

বাণিজ্যিকভাবে মাশরুম উৎপাদন ও বিক্রির পাশাপাশি এলাকার আগ্রহী কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও প্রশিক্ষণও দেওয়া শুরু করেছেন তাঁরা। দুই সহোদরের মাশরুম চাষের খামারটির নাম ‘এনএমসি মাশরুম সেন্টার‘ (নেত্রকোনা মাশরুম সেন্টার)। বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন ও বিক্রির জন্য এটিই উপজেলার প্রথম মাশরুম খামার বলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান। মিনহাজ ও মিরাজ সাবেক সেনা কর্মকর্তা (সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার) বাহাউদ্দিন আহমেদের ছেলে। মিনহাজ ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজ আর মিরাজ কেন্দুয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী।

সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, লেখাপড়ার পাশাপাশি উৎপাদনশীল ও আয়বর্ধ্বক বিকল্প কিছু করার চিন্তা-ভাবনা থেকেই শুরু করেন মাশরুম চাষ। এ অবস্থায় গত বছরের শুরুর দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইউটিউবে ভিডিও দেখে মাশরুম চাষে উদ্বুদ্ধ হলেও তেমন সফল হতে পারেননি। এরপরও দমে না গিয়ে খুঁজতে শুরু করেন অন্য পথ। এরপর মাগুরার ড্রিম মাশরুম সেন্টার থেকে মাশরুম চাষের ওপর ১০ দিনের প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর থেকে নিজ বসতবাড়িতে ‘এনএমসি মাশরুম সেন্টার‘ (নেত্রকোনা মাশরুম সেন্টার) নামে মাশরুম খামারে ওয়েস্টার জাতের মাশরুমের চাষ করেন। মিনহাজ ও মিরাজ জানান এখন প্রতিদিন গড়ে ১৫-২০ কেজি মাশরুম উৎপাদন হয়। খরচ বাদে প্রতিমাসে তাদের আয় এখন ৩০-৩৫ হাজার টাকা। গত দুই মাসে তাদের আয় হয়েছে প্রায় লাখ টাকা। ফলে মাশরুম চাষ করে এখন তাঁরা দেখছেন সফলতার মুখ।

মিনহাজ উদ্দিন আহমেদ আরো জানান, মাগুরার ড্রিম মাশরুম সেন্টার থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে বেশ উপকার হয়েছে। এখন বাড়িতে উৎপাদিত মাশরুম খাওয়ার পাশাপাশি বাইরেও বিক্রি করছি। অনলাইনেও অর্ডার পাচ্ছি।

তিনি বলেন, একটু চেষ্টা করলেই মাশরুম চাষ করে বেকার যুবক যুবতী ও ছাত্র-ছাত্রীদের স্বাবলম্বী হওয়ার সহ পথ মাশরুম। মাশরুম একধরনের সবজি। রুটির মতো খাওয়া যায়। ঘরে চাষ করা যায়। তাই আমাদের দেখাদেখি এখন অন্যরাও মাশরুম চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। এরজন্য তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে।

কেন্দুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা একেএম শাহজাহান কবির জানান, মাশরুম অত্যন্ত পুষ্টিকর, সুস্বাদু ও ঔষধি গুণ সম্পন্ন খাবার। এতে আছে প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল, অ্যামাইনো অ্যাসিড, অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। স্বাদ, পুষ্টি ও ঔষধিগুণের কারণে এটি সারাদেশে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। স্বল্প পুঁজি ও শ্রম ব্যয় করে অধিক আয় করা সম্ভব।

তিনি আরও জানান,বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন ও বিক্রির এটিই উপজেলার প্রথম মাশরুম খামার। মাশরুম চাষি দুই সহোদর আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে থাকি।

আরও পড়ুন
সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়