ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

নৌকায় ভোটে হবে উন্নয়ন : প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:৪৭, ৮ ডিসেম্বর ২০২২  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীর উদ্দেশে বলেছেন, ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনেও আপনাদের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাই।

গতকাল বিকালে কক্সবাজার শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিশাল জনসভায় তিনি এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা সমবেত জনতার কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে বলেন, বিগত তিনটি নির্বাচনে নৌকায় ভোট দিয়েছিলেন বলেই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় আছে। আপনারা ভোট দেবেন কি না ওয়াদা দেন। এ সময় লাখো জনতা দুই হাত উঁচিয়ে সম্মতি দেন। তখন শেখ হাসিনা তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে জনসভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান। কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, মাহবুব-উল আলম হানিফ, ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, সিরাজুল মোস্তফা, বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, জাফর আলম এমপি, আশেক উল্লাহ রফিক এমপি, সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি, শাহীন আক্তার এমপি প্রমুখ। সভামঞ্চে শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন নিখিল, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না, নজরুল ইসলাম বাবু এমপি, যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুর রহমান সোহাগ, ছাত্রলীগের সদ্য বিদায়ী সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি জাতির জনকের কন্যা। যতক্ষণ ক্ষমতায় আছি আপনাদের ভালোমন্দ দেখার দায়িত্ব আমার। যাদের জন্য আমার মা-বাবা-ভাইয়েরা জীবন দিয়েছেন, আমি তাদের কল্যাণে কাজ করছি। মানুষের ভাগ্য উন্নয়নই আমার লক্ষ্য। তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে ২০২২ পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি আছে বলেই এ দেশের উন্নয়ন হচ্ছে। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে এই বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। যে বাংলাদেশের স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছেন। বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি এ দেশকে মানি লন্ডারিং, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস এবং লুটপাট ছাড়া আর কিছু দিতে পারেনি। তারা ৩ হাজার মানুষ আগুন দিয়ে পুড়িয়েছে, ৫০০ মানুষ হত্যা করেছে। ২০০৪ সালের ২৪ আগস্ট আমাদের শান্তি র‌্যালিতে দিনেদুপুরে গ্রেনেড হামলা করে তারেক-খালেদা জিয়া গং। যুদ্ধের ময়দানের গ্রেনেড আমাদের ওপর ছোড়া হয়েছিল। আইভি রহমানসহ ২২ জন নেতা-কর্মী মারা যান। আল্লাহর রহমতে আমি বেঁচে গিয়েছিলাম।

কক্সবাজারে শেখ হাসিনার জনসভা ঘিরে উচ্ছ্বাস ছিল দলীয় নেতা-কর্মী ও সাধারণ জনগণের মধ্যে। এ নিয়ে সাজ সাজ রব ছিল গোটা কক্সবাজারে। সকাল ৮টা থেকে দলে দলে লোকজন স্টেডিয়ামের মাঠে ঢুকতে শুরু করেন। কেউ এসেছেন শত কিলোমিটার দূর থেকে, কেউ এসেছেন বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে মহেশখালী, কুতুবদিয়া থেকে।

মহেশখালী থেকে স্টেডিয়াম এলাকায় পৌঁছান মহেশখালীর কুতুবজোম এলাকার লবণ চাষি আহমদ হোসেন (৪৫)। তিনি বলেন, চলতি মৌসুমে তারা (চাষিরা) লবণের সর্বোচ্চ মূল্য পাচ্ছেন মণপ্রতি ৫৫০ টাকা। গত এক দশকে এত মূল্য পাওয়া যায়নি। লবণের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। লবণ আমদানিও বন্ধ আছে। শত কিলোমিটার দূরের কুতুবদিয়ার আলী আকবর ডেইল থেকে স্পিডবোটে সাগর চ্যানেল পাড়ি দিয়ে শহরে এসেছেন ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম (৪৯)। এত দূর থেকে জনসভায় আসার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে কুতুবদিয়া উপজেলায় বিদ্যুৎ নেই। এখন সাগর চ্যানেলের তলদেশ দিয়ে কুতুবদিয়ায় সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজ চলছে। কয়েক মাসের মধ্যে ঘরে ঘরে আলো জ্বলবে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতেই জনসভায় এসেছেন তিনি। দেখা গেছে, সকাল থেকে বাস, ট্রাক, অটোরিকশা নিয়ে প্রায় শত কিলোমিটার দূরের টেকনাফ, উখিয়া, চকরিয়া, পেকুয়া থেকে লোকজনকে আসতে। তারা শহরের কলাতলী হাঙর ভাস্কর্য মোড়ে নেমে হেঁটে দলবদ্ধভাবে ছুটছেন ৪ কিলোমিটার দূরের জনসভাস্থলের দিকে। রামু, ঈদগাঁও থেকেও বাসে এসেছেন লোকজন। সেন্টমার্টিন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে তিনি গত মঙ্গলবার দুপুরে টেকনাফ পৌঁছান। সেখান থেকে মাইক্রোবাসে গতকাল বিকালের দিকে কক্সবাজার পৌঁছান। সঙ্গে দ্বীপের আরও কয়েকজন আছেন। বরাবরের মতো নৌকা প্রতিকৃতির মঞ্চ নির্মাণ করা হয় জনসভা মাঠে। লাল-সবুজ রঙিন নৌকায় সাজানো হয়েছিল স্টেডিয়ামের পাশের জলাধার। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে জেলার এমপিরা পৃৃথক পৃথকভাবে শোডাউন করেন। লাল, নীল, সবুজ, হলুদ নানা রঙের রঙিন গেঞ্জি-ক্যাপ পরিহিত নেতা-কর্মীদের নিয়ে জনসভাস্থলে আসেন তারা। প্রায় সাড়ে ৫ বছর পর কক্সবাজারে শেখ হাসিনার আগমনকে ঘিরে উচ্ছ্বসিত নেতা-কর্মীরা। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে কক্সবাজারের ইনানীতে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইনানী সমুদ্রসৈকত থেকে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ নৌবাহিনী আয়োজিত বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২৮ দেশের নৌবাহিনী ও মেরিটাইম সংস্থার অংশগ্রহণে চার দিনব্যাপী ইন্টারন্যাশনাল ফ্লিট রিভিউ (আইএফআর)-২০২২ এর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। বিশ্বের মোট ২৮টি দেশের নৌবাহিনীর প্রধান বা উচ্চপদস্থ নৌ-প্রতিনিধিরা এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনীসহ বিশ্বের সাতটি দেশের উল্লেখ সংখ্যক যুদ্ধজাহাজ, মেরিটাইম প্যাট্রল এয়ারক্রাফট ও হেলিকপ্টার এই আইএফআরে অংশ নিয়েছে। আগামী ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে এই আন্তর্জাতিক ফ্লিট রিভিউ। সন্ধ্যায় শেখ হাসিনা হেলিকপ্টারে ঢাকায় ফেরেন।

বিকাল ৩টা ৫২ মিনিটে জনসভাস্থলে এসে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জনসভা মঞ্চে ওঠার আগে তিনি প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কক্সবাজার জেলার ২৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং চারটি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এ কার্যক্রম পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসক মো. মামুুনুর রশিদ। পরে জেলা পানি উন্নয়ন জামে মসজিদের পেশ ইমাম রেজাউল করিম দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন। বিকাল ৪টায় জনসভা মঞ্চে উঠে হাত নেড়ে আগত লাখো নেতা-কর্মীকে অভিনন্দন জানান টানা তৃতীয় মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী। জবাবে দুই হাত নেড়ে লাখো জনতা শেখ হাসিনার অভিনন্দনের জবাব দেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতার আগে স্থানীয় গান ‘যদি সুন্দর একটা মুখ পাইতাম, মহেশখালীর পান বানাইয়া খাওয়াইতাম’ পরিবেশন করা হয়।

এ সময় মঞ্চে উপস্থিত জেলা নেতাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী মজা করে বলেন, ‘পান কোথায়’। মোট ২৮ মিনিটের বক্তৃতায় আগামীতে নৌকায় ভোট চাওয়ার পাশাপাশি বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মানবিক কারণে আমরা বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছিলাম। তাদের যত দ্রুত সম্ভব স্বদেশে প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা চলমান রয়েছে। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর এই কক্সবাজার তথা বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতের প্রতি কেউ মুখ ফিরে তাকায়নি। দীর্ঘ ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে কক্সবাজারকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছিল। কক্সবাজার জেলাবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আমার বাবার অত্যন্ত প্রিয় জায়গায় ছিল, যখনই কারাগার থেকে ছাড়া পেতেন কক্সবাজারে চলে আসতেন। কক্সবাজারের মানুষ সবসময় আমাদের হৃদয়ে আছেন। তিনি বলেন, এই এলাকার উন্নয়ন কারও দাবি করতে হয়নি। প্রতিটি দ্বীপ অঞ্চল ঘুরেছি, তাই সমস্যাগুলো আমি জানি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে যাতে এ এলাকার মানুষ মুক্তি পায়, এ জন্য যা যা করা দরকার আমি করে দিচ্ছি। এই পর্যটন শহর যাতে সুন্দরভাবে গড়ে উঠে এ জন্য কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ তৈরি করে দিয়েছি। সুন্দরভাবে যাতে সমুদ্রসৈকত ব্যবহার হয়, সেই ব্যবস্থা করে দিয়েছি। মাতারবাড়ী মহেশখালীতে পাওয়ার প্লান্ট হচ্ছে গভীর সমুদ্রবন্দরে। আসলে এক সময় আপনারা দেখবেন, এই মহেশখালী সিঙ্গাপুর থেকেও একটি সুন্দর জায়গা হিসেবে গড়ে উঠবে। ইনশাআল্লাহ, সে ব্যবস্থাও আমরা করব। এখানে এলএনজি টার্মিনাল হবে, আমাদের রেলওয়ে যাতে সম্প্রসারণ হয়, সে ব্যবস্থাটাও আমরা নিচ্ছি। আমাদের বিভিন্ন দ্বীপ অঞ্চল, সেখানেও যাতে অর্থনৈতিক অঞ্চল হয়, সেই ব্যবস্থা করে দেব। বিশেষ করে মহেশখালী ও কুতুবদিয়াতে আরও দুটি এবং কক্সবাজারে ৬টি মোট ৮টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দেব। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আসবে। আমাদের ছেলেমেয়ে বিশেষ করে তরুণ ও যুব সমাজ নিজেরা নিজেদের পায়ে দাঁড়াবে। সেই সুযোগ আমরা সৃষ্টি করে দিয়েছি। সবসময় লক্ষ্য থাকে এই অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়ন।

শেখ হাসিনা বলেন, গোটা বাংলাদেশের গ্রামপর্যায়ে আমরা উন্নয়ন করে দিচ্ছি। প্রত্যেকটা গ্রাম শহরের সুযোগ-সুবিধা পাবে। প্রত্যেক গ্রামকে শহর হিসেবে গড়ে তুলে প্রতিটা মানুষকে উন্নত জীবন দেওয়াটাই আমার লক্ষ্য।  রাস্তাঘাট, নৌপথ, সড়কপথ, রেলপথের উন্নয়ন করে মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। আজকে ব্রডব্যান্ড আমরা সব ইউনিয়ন পর্যায়ে পৌঁছে দিচ্ছি,  স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণ করেছি। আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন আমাদের ছেলেমেয়ে যেন গড়ে উঠে এ জন্য হাইটেক পার্ক করে দিয়েছি। সেই সঙ্গে প্রতিটা স্কুলে কম্পিউটার ল্যাব তৈরি করে দিচ্ছি, কম্পিউটার শিক্ষার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। যেন আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন হিসেবে গড়ে ওঠে। ছাত্র-ছাত্রীদের বিনা পয়সায় বই দিই।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত ধ্বংস ছাড়া আর কিছু করতে পারে না। ’৭৫-এর পর ২১ বছর ক্ষমতায় ছিল, বাংলাদেশকে কী দিয়েছে। জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া সরকার ক্ষমতায় ছিল, কিছুই দেয়নি। দেশের মানুষের সম্পদ লুটে খেয়েছে। ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে তারা ক্ষমতায় ছিল, এই দেশে ৫০০ জায়গায় বোমা হামলা হয়েছে। মানুষের জীবনের কোনো নিশ্চয়তা ছিল না। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিল খুন আর সেশনজট। তারা লেখাপড়া ধ্বংস করে দেয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে ৪৫ থেকে ৭৫ ভাগ সাক্ষরতার হার বাড়িয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র করে ৩০ প্রকার ওষুধ আমরা দিচ্ছি।  মা-বোনেরা বিনা পয়সায় ওষুধ পান, চিকিৎসা করাতে পারেন। কর্মজীবী মেয়েদের জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা দিয়ে আমরা সাহায্য করে যাচ্ছি। করোনা-পরবর্তী ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে। বিদেশি প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। যে গম আমরা ২০০ ডলারে কিনতাম এখন ৬০০ ডলারে কিনতে হয়। ৮০০ ডালারে জাহাজ ভাড়া পেতাম, এখন ২৯০০ থেকে ৩৮০০ ভাড়া দিতে হয়। যেখান থেকেই পারি গম-ভোজ্য তেল কিনি যাতে মানুষের কষ্ট না হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আহ্বান জানাব, সবাইকে যার যেখানে যতটুকু জমি আছে, চাষ করবেন। তরিতরকারি, যা পারেন। বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ নিজেদের অর্থনৈতিক মন্দার দেশ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। এখনো আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা শক্তিশালী আছে। ব্যাংকে টাকা আছে। ৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রিজার্ভ আছে। খালেদা জিয়ার আমলে ছিল ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন। আমরা করোনা ভ্যাকসিন বিনা পয়সায় দিয়েছি। আওয়ামী লীগ সরকার কারও কাছে একটি টাকাও নেয়নি। যারা দ্বিতীয়-তৃতীয় ডোজ নেননি, আপনারা ভ্যাকসিন নিয়ে নেবেন। নিম্নবিত্তরা যাতে মাত্র ১৫ টাকায় চাল কিনতে পারে আমরা সে ব্যবস্থাও করে দিয়েছি।

জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। বাবা-মা-ভাই-আত্মীয়-স্বজন হারিয়ে আমি রিক্ত, নিঃস্ব। কিন্তু যে বাংলাদেশের মানুষের জন্য তাঁরা প্রাণ দিয়ে গেছেন, তাঁদের জন্য কাজ করব। এ দেশের মানুষের মাঝেই খুঁজে নেব প্রয়াত আত্মীয়-স্বজনকে।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়