ঢাকা, বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

পিঁপড়ার ডিমে সংসার চলে তাদের!

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪:৩৪, ২৮ নভেম্বর ২০২০  

ছবি- সংগৃহীত

ছবি- সংগৃহীত

‘আমরা তো পাহাড়ে থাহি। আমগোর বাপ-মা অনেক কষ্ট করে সংসার চালাইতো। এহন বাপের (বাবা) অসুখ হওয়ায় বিছানায় পইড়ে গেছে। আমগোর এলাকার ১০ থেকে ১৫ জন পাহাড়ের গাছ-গাছালি থেইক্যা পিঁপড়ার ডিম পাইর‌্যা (সংগ্রহ) বেঁইচ্যো টেহা (টাকা) কামাই (আয়) করে।

তাই আমিও তাদের দেহা-দেহি পিঁপড়ার ডিম পাইর‌্যা দিনে ৩০০ থেকে ৪০০ টেহা কামাই করি। ওই টেহা দিয়েই সংসার চলে আমগোর।’ এ প্রতিবেদকের কাছে এভাবেই এ কথা গুলো বলছিলেন শেরপুরের ঝিনাইগাতীর গারো পাহাড়ের বাসিন্দা টেমাল সাংমা (১৮)। শুধু টেমাল নয় অন্তত ২০ ব্যক্তি পিঁপড়ার ডিম বিক্রির টাকায় তাদের সংসার চালিয়ে আসছেন।

জানা গেছে, পিঁপড়ার ডিম বড়শি দিয়ে মাছ শিকারে মাছের আধার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। পিঁপড়ার ডিম মাছের লোভনীয় খাবার। তাই মাছ শিকারীদের কাছে পিঁপড়ার ডিমের অনেক চাহিদা। বর্তমানে ১ কেজি পিঁপড়ার ডিম ৮০০ থেকে এক হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ডিম সংগ্রহকারী বিজয় সাংমা, মজিদ, নিরঞ্জনের ভাষ্য মতে, পাহাড়াও সাধারণত মেহগনি, আম, লিচুসহ দেশীয় গাছগুলোতেও ডোল পিঁপড়ার বাসা পাওয়া যায়। লালা ব্যবহার করে গাছের ডালের আগার দিকের চার-পাঁচটা পাতা জোড়া দিয়ে শক্ত বাসা তৈরি করে পিঁপড়ার দল।

পরে সেখানে তারা ডিম পারে। বড় বাসা থেকে একশ থেকে দেড়শ গ্রাম ডিম পাওয়া যায়। আশ্বিন-কার্তিক মাসে দিকে এই ডিমের চাহিদা থাকে বেশি। তবে সব থেকে বেশি ডিম পাওয়া যায় শীতের শেষে দিকে ফাল্গুন মাসে। কিন্তু সেই সময় ডিমের চাহিদা তেমন একটা থাকে না।

বাকাকুড়া এলাকার পিঁপড়ার ডিম ব্যবসায়ী আবু সিদ্দিক বলেন, বাকাকুড়া, রাংটিয়া, গজনী, নকশির কয়েকজনের কাছে পিঁপড়ার ডিম পাইকারী মূল্যে কিনে রাখেন। পরে মাছ শিকারী ও শেরপুরের বিভিন্ন দোকানেও পাইকারী বিক্রি করেন। অন্য ব্যবসার পাশা-পাশি এ ব্যবসা থেকেও আয় হয়ে থাকে। দিনে ৫ থেকে ১০ কেজি ডিম বিক্রি করতে পারেন বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুন
সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়