ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্র শুরু করেছে উগ্রবাদী হিন্দু সংগঠন ইসকন

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:২৪, ২১ অক্টোবর ২০২১  

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ- বাংলাদেশ। আবহমানকাল থেকে বাংলার ভূখণ্ডে বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীরা পারস্পরিক সুসম্পর্ক বজায় রেখে একত্রে বসবাস করছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য সংহত রেখেছে যুগের পর যুগ। আর যার যার ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করবে এটাই-তো ধর্মের শিক্ষা।

কিন্তু গত ১৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার কুমিল্লার নানুয়া দীঘির পাড়ের একটি মন্দিরে পবিত্র কোরআন শরীফ রেখে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টা করে কুচক্রী মহল। সৃষ্টি হয় সাম্প্রদায়িক সহিংসতা। আর সেই সহিংসতায় ঘি ঢেলে বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্র শুরু করে উগ্রবাদী হিন্দু সংগঠন ইসকন।

এ ঘটনার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা একের পর এক প্রপাগান্ডা ছড়াতে শুরু করে। পুরনো ভিডিওকে নোয়াখালীর পূজামণ্ডপে হিন্দু মহাজোট কর্মী যতন সাহা হত্যার ভিডিও বলে গুজব ছড়ায় ইসকন। ভিডিওটি মূলত ঢাকার মিরপুরে শাহিন উদ্দিন নামে এক ব্যবসায়িকে কুপিয়ে হত্যার।

তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় র‍্যাব জানতে পেরেছে, শাহিন উদ্দিন হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ক্লিপটি ভারতের কলকাতা থেকে দেবদৃতা ভৌমিক নামের একজন প্রথম ফেসবুক মেসেঞ্জারে ছড়িয়ে দেন। আর দেবদাস মণ্ডল কলকাতা থেকেই ওই ভিডিওটি টুইটারে আপলোড করে গুজব ছড়িয়ে দেন।

আর রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দুপল্লীতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটতেই ২০১৮ সালে ভারতের আগরতলার একটি ব্যাটারি ফ্যাক্টরিতে লাগা ভয়াবহ আগুনের ভিডিওকে পীরগঞ্জের হিন্দুপল্লীর আগুন বলে গুজব ছড়ায় ইসকন অনুসারীরা। ধারণা করা হচ্ছে- এই অগ্নিকাণ্ডের পেছনে হাত রয়েছে ইসকনের।

এসব গুজব ছড়ানোর প্রমাণ পেয়ে টুইটার কতৃপক্ষ ISKCON Bangladesh -এর একাউন্ট ডিলিট করে দিয়েছে।

এখানেই শেষ হয়নি তাদের গুজব রটনা। দুই ইসকন জগৎ গুরু গৌরাঙ্গ দাস এবং নারু গোপাল দাস বাংলাদেশে এসে নোয়াখালীর মন্দিরে হামলার ঘটনার মিথ্যা প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অপরাধীদের আটক করছে না। পুলিশের সামনে দিয়ে এখনও হামলাকারীরা ঘুরে বেড়াচ্ছে’।

অথচ এ পর্যন্ত ৭১ মামলায় সাড়ে পাঁচশোরও বেশি অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দেশের ২৬ জেলায় বাড়তি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এমনকি সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্তদের খাবার, অর্থ সহায়তাসহ ঘরবাড়ি নিমার্ণের জন্য এক লক্ষ বান টিন দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।

মিথ্যে তথ্যে ভরা প্রতিবেদনটি নিয়ে ইসকনপন্থী কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও অতিরঞ্জিত করে সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে। ইসকনের পক্ষ নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধাচরণ করছে তারা।

এমনকি একটি গণমাধ্যম জাতিসংঘের সামালোচনা করে বলেছে, ‘ঘটনার দিন জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে এক ইসকন হিন্দু নেতা চিঠি পাঠালেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি তারা’। সেই চিঠিতেও মিথ্যা তথ্য দিয়েছে ইসকন। ১৬ অক্টোবর ২০২১ (শনিবার) জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেস বরাবর চিঠি দেয় উগ্র এই সংগঠনটি। আর ঘটনার সূত্রপাত ১৪ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার)।

সংগঠনটির ভারতের কলকাতা শাখার ভাইস প্রেসিডেন্ট রাধারমন দাস স্বাক্ষরিত সেই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘গত ৯ দিন যাবৎ বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর সীমাহীন নির্যাতন চালানো হচ্ছে। নোয়াখালী জেলায় যে হিন্দুরা এর প্রতিরোধ করতে গিয়েছে তাদের উপরই ১৯৪৬ সালের দাঙ্গা এবং ‘৭১-এর আদলে নির্যাতন করা হয়েছে।

যা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। এবং এটিকে বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন বিশিষ্টজনেররা।

এখানে বলে রাখা প্রয়োজন, ইসকন কিন্তু হিন্দুদের কোন সংগঠন নয়, হিন্দুবেশধারী ইহুদীদের একটি সংগঠন। যার সৃষ্টি ভারতেও নয়; আমেরিকার নিউইয়র্কে। এই উগ্র সাম্প্রদায়িক সংগঠনটির বেসিক কনসেপ্ট মধ্যযুগের চৈতন্য থেকে আগত। চৈতন্য’র অনতম থিউরী হচ্ছে- ‘নির্যবন করো আজি সকল ভুবন’। যার অর্থ- সারা পৃথিবীকে যবন মানে- মুসলমান মুক্ত করো।

সংগঠনটি সম্পর্কে একুশে পদকপ্রাপ্ত অধ্যাপক আবু রুশদ তার ‘বাংলাদেশে র’ বইয়ে তিনি বলেছেন- ‘ইসকন নামে একটি সংগঠন বাংলাদেশে কাজ করছে। এর দফতর নদীয়া জেলার পাশে মায়াপুরে। মূলতঃ এটা ইহুদীদের একটি সংগঠন বলে জানা গেছে। এই সংগঠনের প্রধান কাজ হচ্ছে বাংলাদেশে উস্কানিমূলক ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করা, যার উদ্দেশ্য হচ্ছে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি।’

বাংলাদেশে হিন্দু-মুসলিম বিভেদ ও সাম্প্রদায়িক উস্কানি সৃষ্টির মূল ইন্ধনদাতা এই ইসকন। তাদের উপর দিয়ে অতিহিন্দু মনে হলেও এদের মূল উদ্দেশ্য বিভ্রান্তি ছড়িয়ে কৌশলে ক্ষমতার কেন্দ্রে যাওয়া। তাই তো শাহবাগে বিচারের নামে আন্দোলনের মাঝে দাবি তুলেছে- ‘সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয়’ এবং জাতীয় বাজেটে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য জিডিপির ১৫% বরাদ্দ দিতে হবে তাদের।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়