ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ে আল-জাজিরার মিথ্যাচার

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪:৪০, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১  

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

সরকারের ঈর্ষণীয় সফলতায় ঘুম হারাম দেশবিরোধেীদের। এ কারণে তারা একের পর এক মিথ্যাচারে লিপ্ত। এবার সংঘবদ্ধ ওই চক্রটি ২০০৯ সালের ২৫ ও ‘২৬ ফেব্রুয়ারি সংগঠিত বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ে মিথ্যাচারে মেতেছে। যথারীতি তাদের প্রোপাগান্ডা সঙ্গী ছিল কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের করা এ সংক্রান্ত একটি ভিডিওর বাংলা ভার্সন বিএনপি-জামায়াতের ‘পেইড এজেন্ট’দের টাইমলাইনে ঘুরে ফিরছে। যার সিঁকেভাগও সত্যতা নেই। এমনকি সবচেয়ে বড় কথা, ভিডিওর কোথাও তারা প্রমাণাদি পেশ করতে পারেনি। শুধুমাত্র মনগড়া কথার উপরেই ভিডিওটি নির্মাণ করেছে। এখন বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে আপনারাই বিচার করুন, তাদের উদ্দেশ্য কী? আর তারা কেনই বা এগুলো করছে?

দায়িত্বশীল সূত্রের তথ্যমতে, কিছুদিন আগেই বিএনপি-জামায়াত জোটের হয়ে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে বাংলাদেশবিরোধী একটি মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করে কাতারভিত্তিক নিউজ নেটওয়ার্ক আল-জাজিরা। সেই প্রতিবেদনের পুরোটাই মিথ্যে হওয়ায় যথারীতি তারা প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি। বরং ভিডিও, ছবি ও ভয়েজের কারসাজির মাধ্যমে প্রতিবেদনটি তৈরি করে। কিন্তু পরে তা দেশের জনগণ বুঝতে পারে এবং বর্জন করে। এতে ‘আহত পাখি’র মত মর্মাহত হয় স্বাধীনতাবিরোধী বিএনপি-জামায়াত চক্র। কারণ, তাদের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের পরিবর্তে অধরাই থেকে যায়।

পরবর্তীতে তারা আল-জাজিরাকে আবারও বড় অংকের অর্থ প্রদান করে চক্রটি। বলে পূর্বের ন্যায় আবারও ছবি, ভিডিও ও ভয়েজের কারসাজির মাধ্যমে যেন আরেকটি প্রতিবেদন তৈরি করা হয়, যা সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। পরিকল্পনা মোতাবেক বিডিআর বিদ্রোহের ইস্যুকে তারা ক্যাশ করে সামনের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। তারই ফলস্বরূপ শতভাগ মিথ্যাচারে পূর্ণ প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিডিআর বিদ্রোহে সরকারের তরফ থেকে উদ্ধার অভিযানের অনুমতি দেয়া হয়নি। এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একবারের জন্যও জানতে চাননি ভেতরে আটকা পড়াদের কথা। বরং সে সময় তিনি চা চক্রে ব্যস্ত ছিলেন। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। কারণ, প্রধানমন্ত্রী সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখছিলেন এবং নির্দেশনা দিচ্ছিলেন কত দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করা যায়। মিথ্যাচার করে ভিডিওতে আরও বলা হয়, বিদ্রোহকালীন সময়ে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনের ভূমিকা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করা হয়। অথচ প্রকৃত সত্য হলো, সাহারা খাতুন নিজে ঘটনাস্থলে গিয়ে সবকিছু তদারকি করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।

এখানেই শেষ নয়। ভিডিওতে ভয়েজ এডিট করে একজন ক্ষুব্ধ সেনা কর্মকর্তার বয়ান পেশ করা হয়েছে। কিন্তু তার পরিচয় পেশ করা হয়নি। কেন এই পরিচয় গোপন? আর কি-ই বা তার উদ্দেশ্য? সামরিক কর্মকর্তাদের তদন্তের সময় জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু শীর্ষ আওয়ামী মহাজোট নেতাকর্মীদের নাম বেরিয়ে এসেছে বলে দাবি করা হয়। যার কোন নথিগত বা বাহ্যিক কোন প্রমাণ তারা দেখাতে পারেনি। আরেকটি বিষয়ও বিস্ময়কর। কয়েকজন জবানবন্দিদাতার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সেই জবানবন্দিপত্রের অস্পষ্ট কপি কেন দেখানো হলো? নিজেদের চিত্রনাট্যে ভয়েজওভার দিয়ে কোন কিছু বললেই কি সেটা বিশ্বাসযোগ্য হবে? গ্রহণযোগ্য হবে?

তদন্ত কমিটির রিপোর্ট নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে আল-জাজিরার বাংলা ভার্সনের ওই প্রতিবেদনে। পাশাপাশি বলা হয়েছে, ২৭ ফেব্রুয়ারি সজীব ওয়াজেদ জয় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় জড়িতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। কিন্তু প্রমাণস্বরূপ তার ছবি বা ভিডিও কেন প্রকাশ করা হয়নি? মনগড়া সাজানো কথা বললেই কি মানুষ তা মেনে নেবে? প্রতিবেদনের সবশেষে, সেনা সদস্যদের উসকে দেয়ারও প্রাণান্তর চেষ্টা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে দেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ভাষ্য, দেশবিরোধী শক্তি মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাই একের পর এক মিথ্যাচারে মেতেছে। মোটা অংকের টাকা খরচ করে বিদেশি মিডিয়া ও নিজেদের পেইড এজেন্টদের মাধ্যমে তারা চাইছে সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে। এমতাবস্থায় সরকারের পাশাপাশি আমাদের সবাইকে সদা সতর্ক থাকতে হবে যাতে, তাদের অসৎ উদ্দেশ্য কোনভাবেই সাধন না হয়।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়