ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

বিডিআর হত্যাকাণ্ডে কারা জড়িত ছিলো?

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:২৪, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১  

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি। রাজধানীর পিলখানায় বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দফতরে যে জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল তা বাংলাদেশের ইতিহাসের এক কলঙ্কময় অধ্যায়। অদ্বিতীয়ভাবে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, সেদিনের সেই ঘটনা শুধু বাংলাদেশ নয়। বিশ্ববিবেককেও প্রচণ্ডভাবে নাড়া দিয়েছিল। কারণ, একক কোনো ঘটনায় এতগুলো সামরিক কর্মকর্তা হত্যাকাণ্ড ইতিপূর্বে পৃথিবীর ইতিহাসে আর ঘটেনি। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে একে একে এই ঘটনার পেছনের খলনায়কদের পরিচয় মেলে। জানা যায়, তারা কোন মতাদর্শের এবং কি লক্ষ্যে এই হত্যাযজ্ঞ চালায়।

নির্ভরযোগ্য সূত্রের তথ্যমতে, রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা নষ্টের চক্রান্তের অংশ হিসেবে বিডিআর বিদ্রোহ সংগঠিত হয়। কারণ, তার মাত্র কিছুদিন আগেই মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি সরকার গঠন করে। বিষয়টি সহজভাবে নেয়নি স্বাধীনতাবিরোধী বিএনপি-জামায়াত চক্র। তাই ক্ষমতা হারানোর প্রতিশোধ হিসেবে তারা পাকিস্তানের আইএসআইএর সহযোগিতায় পিলখানা হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষাপট রচনা করে। আর এর মাস্টারমাইন্ড ছিলেন লন্ডনে পলাতক ফেরারি আসামি ও বর্তমানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

এ কারণে তিনি বিডিআর বিদ্রোহের আগের রাতে তার মা খালেদা জিয়াকে লন্ডন থেকে ৪৫ বার ফোন করেন এবং নির্দেশনা দেন দ্রুত ক্যান্টনমেন্টের বাসা থেকে বের হয়ে আন্ডারগ্রাউন্ডে পালিয়ে যেতে। ছেলের কথামত সেদিন দুপুর ১২টার পরিবর্তে খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠেন খালেদা। এরপর রেডি হয়ে সকাল সাড়ে ৭ টা থেকে ৮টার মধ্যে বাসা থেকে কালো কাচের গাড়িতে করে পালিয়ে যান।

আইনের শাসন অমান্য করে, ইতিহাসের জঘন্যতম অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক সশস্ত্র বাহিনীর ৫৭ জন মেধাবী কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করেন বিএনপিপন্থী বিডিআর জাওয়ানেরা। যাদের মধ্যে ডিএডি তৌহিদ, বিদ্রোহী সিপাহী মাঈন, সুবেদার মেজর গোফরান মল্লিকসহ যারা হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত, তাদের প্রায় সকলেই বিএনপি আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত। এছাড়া টাঙ্গাইল থেকে গ্রেপ্তার হওয়া ২২ জন বিডিআর সদস্য ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আসামি হওয়া সত্ত্বেও বিএনপির উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুর সুপারিশে চাকরি পেয়েছিল।

সূত্রটি আরও জানায়, মোটিভ ছাড়া কোন অপরাধ সংগঠিত হয় না। এক্ষেত্রেও বিডিআর বিদ্রোহের কারণ একটি। আর তা হচ্ছে বিশাল ম্যান্ডেট পাওয়া সরকারের পতন ও দেশকে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দেয়া। বিষয়টি দ্রুত আমলে নিয়ে সরকার বিদ্রোহে জড়িতদের শাস্তি গ্রহণে অগ্রসর হয়। এমনকি ঘটনার পরপরই এফবিআই ও স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের সহযোগিতা চায়।

কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য ওই সময় কম-বেশি সবাই এগিয়ে এলেও, এগিয়ে আসেনি স্বাধীনতাবিরোধী ও বিডিআর বিদ্রোহের মূল চক্রান্তকারী বিএনপি-জামায়াত চক্র। পাশাপাশি তাদের নেতৃবৃন্দও ছিলেন আত্মগোপনে। নিজেদের ‘থলের বিড়াল’ যাতে না বেরিয়ে পড়ে, সে কারণে তখন অভিযুক্তদের পক্ষে চক্রটি আইনি লড়াই চালায়। থেমে ছিল না বিএনপি-জামায়াত নিয়ন্ত্রিত মিডিয়াগুলোও। তারাও জল ঘোলা করার পাঁয়তারায় ছিলো। অপরদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রয়াত সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীও আর্মি অফিসারদের মৃত্যু প্রসঙ্গে ‘কিছু প্রাণী মারা গেছে’ বলে বিদ্রূপ করেন।

সবমিলিয়ে এটা পরিষ্কার যে, এই ঘটনার সঙ্গে বিএনপি-জামায়াত চক্র ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কারণ, তারা বিডিআরদের উস্কানি দিয়ে অবৈধভাবে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের পাঁয়তারা করেছিল। যেটা খালেদা-তারেকের পাশাপাশি তাদের জোট নেতাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে একাধিকবার প্রকাশিত হয়েছে। দেশবাসী সে সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে অবগত।

রাজনৈতিক বিজ্ঞজনদের ভাষ্য, বিডিআর বিদ্রোহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে জাতিকে অনিশ্চয়তা ও ভয়াবহ দুর্যোগ থেকে রক্ষা করেছেন তা অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তার দৃঢ় পদক্ষেপের কারণেই আজ এ বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের বিচার সম্পন্ন হয়েছে।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়