ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪ ||  চৈত্র ১৪ ১৪৩০

ভালো-মন্দ কাজ নিয়ে হাদিসের উপমা

ধর্ম ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬:৫৩, ৭ জানুয়ারি ২০২২  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

মানুষের ভালো ও মন্দ কাজ কোনটি? তা বোঝার উপায় কী- এ সম্পর্কে হাদিসে পাকে একাধিক উপমা এসেছে। নবিজী বলেছেন, যে মানুষ শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় কাজ করবে এবং লোকজন তাঁকে ভালো কাজের জন্য ভালোবাসবে; এটা ঈমানদার ব্যক্তির জন্য আগাম সুসংবাদ। মানুষের ভালো কাজ ও মন্দ কাজের উপমাগুলো কেমন?

হজরত আবু যার রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন আমি নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বললাম, কোনো ব্যক্তি কেবল আল্লার সন্তুষ্টির আশায় কাজ করে এবং লোকজন তার সেই কাজের জন্য তাকে ভালোবাসে (এটি কী?)। তিনি বললেন, ‘এটা তো ঈমানদার ব্যক্তির জন্য আগাম সুসংবাদ।’ (ইবনে মাজাহ, মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ)

ভালো ও মন্দ কাজের উপমা

১. হজরত আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বললো, আমি কিভাবে জানবো- যখন আমি ভালো কাজ করি এবং যখন আমি মন্দ কাজ করি? নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘যখন তুমি তোমার প্রতিবেশিদের বলতে শুনবে যে-

‘তুমি ভালো কাজ করেছো, তবেই তুমি ভালো কাজ করেছো। আর যখন তুমি তাদেরকে বলতে শুনবে যে, তুমি মন্দ কাজ করেছো, তবেই তুমি মন্দ কাজ করেছো।’ (ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আমাদ, মিশকাত)

২. হজরত কুলসুম আল-খুযাঈ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, ‘এক ব্যক্তি নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বললো, হে আল্লাহর রাসুল! আমি ভালো কাজ করলে কিভাবে জানতে পারবো যে, আমি ভালো কাজ করেছি এবং মন্দ কাজ করলেই বা কিভাবে বুঝবো যে,আমি মন্দ কাজ করেছি?

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘যখন তোমার প্রতিবেশি বলে যে, তুমি ভালো কাজ করেছো, তবেই তুমি ভালো কাজ করেছো এবং যখন তারা বলে যে, তুমি মন্দ করেছো তবেই তুমি মন্দ কাজ করেছো।’ (ইবনে মাজাহ, মিশকাত)

৩. এমনকি মৃতব্যক্তিদের মধ্যে কারা ভালো বা জান্নাতি আবার কারা মন্দ ও জাহান্নামি তাও বর্ণনা করেছেন নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। হাদিসে এসেছে-

হজরত আবু যুহাইর আস-সাকাফি রাদিয়াল্লাহু আনহু তার বাবার সূত্রে বর্ণনা করেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নাবাওয়াহ বা বানাওয়াহ নামক স্থানে আমাদের উদ্দেশে ভাষণ দেন। রাবি বলেন, নাবাওয়াহ তায়েফের একটি স্থানের নাম। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘অচিরেই তোমরা জান্নাতি এবং জাহান্নামিদের পৃথকভাবে চিনতে পারবে। তারা জানতে চাইলেন, হে আল্লাহর রাসুল! তা কিভাবে?

তিনি বললেন- ভালো প্রশংসা ও খারাপ প্রশংসার দ্বারা; তোমরা যে মৃতের প্রশংসা করবে সে জান্নাতি এবং যে মৃতের দুর্নাম করবে সে জাহান্নামি। আর তোমরা (পৃথিবীতে) পরস্পরের বিরুদ্ধে আল্লাহর সাক্ষীও বটে।’ (ইবনে মাজাহ)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, সব সময় আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় ভালো কাজ করা। যে কোনো কাজ এমনভাবে করা যেন জীবিত বা মৃত্যুর পরও যেন কেউ খারাপ বলতে না পারে। আর তাতেই মিলবে ভালো কাজের স্বীকৃতি ও জান্নাত পাওয়ার নিশ্চয়তা। আর যে কাজ মন্দ ও মৃত্যুর পর মানুষ খারাপ ধারাণা পোষণ করবে কিংবা যার পরিণাম জাহান্নাম; তা থেকেও বিরত থাকা জরুরি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সব সময় তার সন্তুষ্টির আশায় ভালো কাজ করার তাওফিক দান করুন। মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়