ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪ ||  চৈত্র ১৪ ১৪৩০

মার লিমিটেডের আপিল খারিজ, শিল্প এলাকায় স্থানান্তরের আদেশ বহাল

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৪৫, ২ মে ২০২১  

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

হবিগঞ্জের মাধবপুরে নদীর পানি ও পরিবেশ দূষণের অভিযোগে ড্রাই স্টার্চ পাউডার উৎপাদনকারী ‘মার কোম্পানি লিমিটেড’কে শিল্প এলাকায় স্থানান্তরে হাইকোর্টের রুলের বিরুদ্ধে করা আপিল খরিজ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এই আদেশের ফলে মার লিমিটেডকে শিল্প এলাকায় স্থানান্তরের আদেশ আপিল বিভাগেও বহাল থাকল।

ফলে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় নদীর পানি ও পরিবেশ দূষণের অভিযোগে ড্রাই স্টার্চ পাউডার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান মার লিমিটেডকে শিল্প এলাকায় যেতেই হবে। আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন বেলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ কবীর।

হাইকোর্টের রুলের বিরুদ্ধে শিল্পপ্রতিষ্ঠান মার লিমিটেড-এর পক্ষ থেকে করা আপিলের বিষয়ে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমদু হোসেনের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে এ দিন রিটকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ বেলা-এর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মিনহাজুল হক চৌধুরী। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ কবীর। অন্যদিকে মার-লির পক্ষে শুনানি করেন এম কে রহমান।

আইনজীবী মিনহাজুল হক চৌধুরী জানান, পরিবেশ দূষণকারী প্রতিষ্ঠান মার-লি’র কার্যক্রম প্রতিরোধে বিবাদীদের ব্যর্থতাকে কেন অবৈধ, আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ও জনস্বার্থবিরোধী ঘোষণা করা হবে না, প্রতিষ্ঠানটিকে বর্তমান স্থান থেকে ঘোষিত কোনো শিল্প এলাকায় স্থানান্তরের নির্দেশ দেয়া হবে না এবং ওই প্রতিষ্ঠানের দূষণ থেকে এখতিয়ারপুর খাল রক্ষার কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে গত ১৫ মার্চ হাইকোর্ট রুল জারি করেছিলেন।

হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেন প্রতিষ্ঠানের পক্ষের আইনজীবী। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বারজজ আদালত গত ২০ এপ্রিল নো অর্ডার দিয়ে আপিল বিভাগের নিয়মিত ও পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি ও আদেশের জন্যে পাঠায়। আপিল বিভাগ ওই আবেদন শুনানি শেষে হাইকোর্টের সেই আদেশ বহাল রাখেন।

তিনি বলেন, ‘এর আগে হাইকোর্ট রুল জারির পাশাপাশি মামলাটির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির সব কার্যক্রম পরিচালনা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি চালু রাখার ফলে এলাকার পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থার ক্ষতি নিরূপণ সাপেক্ষে প্রতিবেদন প্রস্তুত করে দুই মাসের মধ্যে আদালতে জমা দেয়ার নির্দেশ দেন।’

পরিবেশ দূষণের বিষয়টি উল্লেখ করে বেলার এই আইনজীবী বলেন, ‘মার-লি’ নামক কোম্পানিটি মূলত ড্রাই স্টার্চ পাউডার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে দীর্ঘদিন থেকে তার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। কারখানার প্রচুর পরিমাণে তরল বর্জ্য উৎপন্ন হয়। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে কারখানায় সৃষ্ট এসব তরলবর্জ্য কোনো ধরণের শোধন ছাড়াই পাশ্ববর্তী এখতিয়ারপুর খালে ফেলা হয়। এতে খালের পুরো পানি দূষিত হয়ে পড়ে।

তিনি বলেন, কারখানার দূষিত পানি ও অপরিশোধিত বর্জ্যের দুর্গন্ধে ছাতিয়াইন ইউনিয়নের শ্রমিতপুর, দাসপাড়া, ছাতিয়াইন উত্তর, ছাতিয়াইন দক্ষিণ, সাকুচাইল, পিয়াইম, শিমুলঘর গ্রামসহ আশেপাশে অবস্থিত অন্য উপজেলার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রতিবাদে এলাকাবাসী বিভিন্ন সময়ে প্রতিবাদ সভা, সমাবেশ, মানববন্ধন, রাস্তা অবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালন করে থাকলেও এসবে কোনো কাজে না আসায় আদালতে রিট করা হয়।

রিটে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদফতরের (ডিজি) মহাপরিচালক, হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক (মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট), পরিবেশ অধিদফতরের সিলেট অঞ্চলের পরিচালক, মাধবপুর উপজেলার চেয়ারম্যান, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানটির মালিকসহ সংশ্লিষ্টদেরকে বিবাদী করা হয়।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়