ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪ ||  চৈত্র ১৪ ১৪৩০

যাদের জন্য দুনিয়া ও পরকালে বড় পুরস্কারের ঘোষণা

ধর্ম ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫:০০, ৩০ নভেম্বর ২০২১  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ভিক্ষাবৃত্তি সবচেয়ে নিকৃষ্ট কাজ। সক্ষমতা থাকতে কেউ কারো কাছে কোনো কিছু চেয়ে বেড়ানোকে অপছন্দ করতেন নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। যারা ভিক্ষা করবে না বা কারো কাছে কোনো কিছু চাইবে না; তাদের জন্য দুনিয়া ও পরকালে অনেক বড় পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। কী সেসব পুরস্কার?

মানুষের জন্য পরকালে সবচেয়ে বড় চাওয়া-পাওয়া হলো জান্নাত। আল্লাহ তাআলা যেসব বান্দাদের জন্য পরকালে জান্নাতের জিম্মাদার হয়েছেন তাদের মধ্যে যারা ভিক্ষা করে না; তারাও একজন। হাদিসের বর্ণনা থেকে তা সুস্পষ্ট। কেননা তিনি ভিক্ষা করা থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন। একাধিক হাদিসে এসেছে-

১. হজরত সাওবান রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমাকে নিশ্চয়তা দেবে যে, সে অন্যের কাছে কিছু চাইবে না; ভিক্ষা করবে না। তাহলে আমি তার জান্নাতের যিম্মাদার হবো। হজরত সাওবান রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি। এরপর তিনি কারো কাছে কোনো কিছুই চাননি।’ (আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ)

এ হাদিসে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বান্দার জান্নাতের জিম্মাদার হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন; যদি তারা ভিক্ষা না করে কিংবা কারো কাছে কোনো কিছু না চায়।

২. হজরত আওফ ইবনু মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, আমরা সাত অথবা আট অথবা ৯ জন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে ছিলাম। তিনি বললেন, ‘তোমরা কি আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে বাইআত গ্রহণ করবে না? অথচ আমরা কয়েকদিন আগেই বাইআত নিয়েছি, তাই আমরা বললাম, আমরা তো আপনার কাছে বাইআত হয়েছি। এমনকি তিনি এ কথাটি তিনবার বললেন। এরপর আমরা আমাদের হাত প্রসারিত করে বাইআত গ্রহণ করলাম। একজন বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা তো (একবার) বাইআত নিয়েছি, তাহলে এখন আবার কিসের উপর বাইআত হবো? তিনি বললেন-

> তোমরা এক আল্লাহর ইবাদাত করবে; তাঁর সঙ্গে কাউকে শরিক করবে না।

> পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে এবং

> আমিরের (নেতার) কথা শুনবে ও তার আনুগত্য করবে।

> তিনি সংক্ষেপে নিচু স্বরে বললেন, ‘মানুষের কাছে কিছু সাওয়াল (ভিক্ষা) করবে না।

বর্ণনাকারী বলেন, এদের কেউই (সফরে) একটি ছড়ি নীচে পড়ে গেলেও অন্যকে তা তুলে দিতে অনুরোধ করেননি।’ (আবু দাউদ, মুসলিম, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ)

এ হাদিসে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবায়ে কেরাম থেকে এ মর্মে কিছু বিষয় সম্পর্কে বাইআত নিয়েছেন। এর মধ্যে ভিক্ষাবৃত্তিও একটি। যা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন প্রিয় নবি।

কখনো অভাব পূরণ হবে না

এমনকি যারা কঠিন বিপদে পড়ে মানুষের কাছে প্রয়োজন পূরণের ইচ্ছা প্রকাশ করে মহান আল্লাহ কখনো তাদের অভাব পূরণ করবেন না বলেও ঘোষণা দিয়েছেন প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। হাদিসে এসেছে-

হজরত ইবনু মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

‘যে ব্যক্তি কঠিন অভাবে জর্জরিত; সে মানুষের সামনে প্রয়োজন পূরণের ইচ্ছা প্রকাশ করলে এ অভাব দূর হবে না। আর যে ব্যক্তি তার অভাবের কথা শুধু আল্লাহর কাছে বলে, আল্লাহই তার জন্য যথেষ্ট। হয় তাকে তাড়াতাড়ি মৃত্যু দিয়ে অভাব থেকে মুক্তি দিবেন অথবা তাকে কিছু দিনের মধ্যে ধনী বানিয়ে দেবেন।’ (আবু দাউদ, তিরমিজি, মুসতাদরাকে হাকেম, বায়হাকি)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, দুনিয়া ও পরকালের কল্যাণের আশায় কারো কাছে ভিক্ষা না করে মহান আল্লাহর কাছে প্রয়োজনের কথা পেশ করা। মহান আল্লাহই বান্দার সব অভাব পূরণ করে দেবেন।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হাদিসের উপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়