ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

যেভাবে বের করবেন জাকাতের হিসাব

ধর্ম ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪:৪৬, ১১ মে ২০২১  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

বরকতময় রমজান আমাদের সামনে বিদ্যমান। একে একে রমজানের দিনগুলো শেষ হতে চলেছে। হাদিসের ভাষ্যানুযায়ী, রমজানে একটি নফল ইবাদতে একটি ফরজের সমান সওয়াব পাওয়া যায়। আর একটি ফরজ ইবাদতে মেলে সত্তর গুণ সওয়াব। জাকাত যেহেতু ফরজ ইবাদত, তাই এক হাজার টাকা জাকাত হিসেবে আদায় করা হলে সত্তর হাজার টাকা জাকাত আদায়ের সওয়াব পাওয়া যায় রমজানে। এ কারণে অনেকেই জাকাত আদায়ের জন্য বেছে নেন পবিত্র রমজান মাস।

রমজানে জাকাতের উসিলায় ঈদুল ফিতরের আগে লাখো পরিবারে পৌঁছে যায় প্রয়োজনীয় খাদ্য-বস্ত্র। কারও জন্য জাকাতের টাকায় তৈরি হয় একটা মাথা গোঁজার ঠাঁই। জাকাত মূলত সম্পদ ও মনের পরিশুদ্ধির জন্য। কোনো ব্যক্তি যেন তার কাছে জমে থাকা সম্পদ একান্ত তারই মনে না করে। জাকাত প্রদানের মাধ্যমে সম্পদ জমানোর লোভ ত্যাগ করা হয়, আল্লাহর আনুগত্য প্রকাশ পায়। সেই সঙ্গে সম্পদ বৃদ্ধির ওয়াদা রয়েছে। বাস্তবেই জাকাত দিলে সম্পদ বৃদ্ধি পায়। 

জাকাত কাকে দেবেন, কীভাবে দেবেন? 
 জাকাত দেয়ার ক্ষেত্রে শরীয়তে কিছু নিয়ম আছে। জাকাত প্রাপ্যদের তালিকা দেয়া হয়েছে কোরআনে। গরিব, নিঃস্ব ব্যক্তি, জাকাত আদায় ও বণ্টন ব্যবস্থায় নিয়োজিত ব্যক্তি, ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি, আল্লাহর পথের পথিক এবং অভাবী মুসাফির জাকাতের অর্থ ও সম্পদ গ্রহণ করতে পারে।
নিকটাত্মীয়দের জাকাত দেওয়া উত্তম। তবে নিজের সন্তান বা তার অধস্তনকে কিংবা মা-বাবা বা তাদের ঊর্ধ্বতনকে, স্বামী-স্ত্রীকে জাকাত দেয়া যায় না। এমনিভাবে রাসুলের বংশের কেউ জাকাত নিতে পারেন না।
 
জাকাত দেয়ার সময় মনে মনে জাকাত দেয়ার নিয়ত বা ইচ্ছা করলেই জাকাত আদায় হয়ে যাবে। জাকাত গ্রহিতাকে ‘এটা জাকাতের সম্পদ’ জানানোর প্রয়োজন নেই। অভাবীদের প্রয়োজনের প্রতি লক্ষ করে সারা বছরই জাকাত দেয়া উচিত। বরং অত্যন্ত প্রয়োজনের সময় এগিয়ে আসায় তা রমজানে দানের চেয়ে কম হবে না। এ লক্ষ্যে অগ্রিম জাকাত দেয়া যায়, বছর শেষে সারা বছর যা জাকাত দেয়া হয়েছে তা সমন্বয় করে নেয়া যায় জাকাতের হিসাব থেকে।

অনেক ক্ষেত্রে নগদ অর্থ কম থাকে, কিন্তু স্বর্ণ থাকায় অথবা জাকাতযোগ্য অন্যান্য মাল থাকায় জাকাত দেয়া ফরজ হয়ে পড়ে। সে ক্ষেত্রে মোট কত টাকা জাকাত ওয়াজিব হয়েছে তা হিসাব করে নিয়ে অল্প অল্প করে সারা বছরই জাকাত দেয়া যায়। কারও যদি ২০ হাজার টাকা জাকাত আসে তাহলে তা কয়েক মাসেও ভাগ করে দিতে পারে। আবার এক বারেও দিতে পারে। একজনকে দিতে পারে বা একাধিক জনকেও দিতে পারে।

জাকাত আদায়ের ক্ষেত্রে টাকা বা সম্পদের পূর্ণ মালিকানা জাকাত গ্রহিতাকে দিতে হবে। তাই যেসব ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তিমালিকানা হয় না যেমন মসজিদ, রাস্তাঘাট, মাদ্রাসার স্থাপনা, কবরস্থান, এতিমখানার বিল্ডিং ইত্যাদি এসব তৈরির কাজে জাকাতের টাকা ব্যয় করা যাবে না।

মাদ্রাসার গরিব-এতিম ছাত্রদের জন্য মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জাকাতের টাকা উঠিয়ে থাকেন। তাই মাদ্রাসার ছাত্রদের প্রতিনিধির কাছে গরিব এতিম ছাত্রদের কাছে জাকাতের টাকা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে জাকাতের টাকা দেওয়া যাবে। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এসব টাকা সরাসরি ছাত্রছাত্রীদের মালিকানায় দেবেন। পরবর্তী সময়ে ছাত্ররা তাদের থাকা-খাওয়া, বই-খাতা, চিকিৎসা, বস্ত্র বাবদ মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে দিতে পারবে।
জাকাতের টাকায় ব্যক্তি বিশেষকে স্বাবলম্বী করার জন্য ক্ষুদ্র ব্যবসার পুঁজিও দেওয়া যায়। ব্যক্তিমালিকানায় নলকূপ, কৃষি সরঞ্জামাদি দেয়া যায়। গৃহনির্মাণ করে অভাবী ব্যক্তিকে মালিকও বানিয়ে দেওয়া যায় জাকাতের টাকায়। বিধবা, এতিমের যতœ, তাদের চিকিৎসা, গরিব ছেলেমেয়ের বিয়ে, গরিবদের লেখাপড়া এমন যেকোনো জনকল্যাণমূলক কাজ করা যাবে জাকাতের টাকায়, শর্ত একটাই অভাবীকে মালিক করে দিতে হবে জাকাতের টাকার।

জাকাত কারা দেবেন?
এসব জাকাত কারা দেবেন, এ ব্যাপারে শরিয়তের নির্দেশনা হলো স্বাধীন, প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ বুদ্ধিসম্পন্ন সম্পদশালী মুসলিম নর-নারী চন্দ্র বছরান্তে তার জাকাতযোগ্য সম্পদের চল্লিশ ভাগের একভাগ তথা ২.৫ শতাংশ টাকা বা সম্পদ গরিব বা জাকাত গ্রহণের উপযুক্ত ব্যক্তিকে প্রদান করবেন। এটিই জাকাত। ইসলামের দৃষ্টিতে সাহেবে নিসাব বা সম্পদশালী হলেন যার কাছে ঋণ, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও প্রয়োজনীয় খাদ্য-বস্ত্রের অতিরিক্ত স্বর্ণ, রূপা, নগদ টাকা ও ব্যবসায়িক সম্পত্তির কোনো একটি বা সব কটি রয়েছে যার সমষ্টির মূল্য সাড়ে সাত তোলা (৮৭.৪৮ গ্রাম) স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা (৬১২.৩৬ গ্রাম) রুপার সমান হয়, তিনিই সম্পদশালী। সম্পদশালী ব্যক্তি জাকাত নিতে পারেন না, তার পক্ষ থেকে কোরবানি দিতে হয়, বছরান্তেও সম্পদশালী থাকলে জাকাত দিতে হয়। জাকাতের টাকা হিসাব করার ক্ষেত্রেও যে কোনো রেটে হিসাব করতে পারেন। তবে মধ্যম রেটে হিসাব করা উত্তম। উচ্চ রেটে হিসাব করলে অবশ্য গরিবরা বেশি পাবে।

জাকাত ও আয়কর
জাকাত প্রদান সহজ। অপরদিকে আয়কর হয় অনেক বেশি। আয়কর হয় আয় করলেই। জাকাত হয় বছর শেষে উদ্বৃত্ত থাকলে। তাই কোনো চাকরিজীবী যদি বছরে ১৪ লাখ টাকা বেতন পান, তাহলে তাকে ১৪ লাখ টাকার আয়কর দিতে হয়। তা প্রায় সত্তর হাজার টাকা হতে পারে। অপরদিকে ওই চাকরিজীবী যদি বছর শেষে ২ লাখ টাকার মালিক থাকেন, তাহলে তাকে মাত্র ৫ হাজার টাকা জাকাত দিতে হবে। মুসলিম নাগরিককে জাকাত ও আয়কর দুটো-ই দিতে হয়।

যেসব ক্ষেত্রে জাকাত দিতে হয়
জাকাত দিতে হয় সোনা, রুপা, নগদ সম্পদ, ব্যবসায়িক সম্পদ, জমাকৃত সম্পদ, উৎপাদিত কৃষি ফসলের। চারণভূমিতে চরে বেড়ায় এমন গরু, ছাগল, উট, দুম্বা যখন জাকাত ফরজ হওয়ার পরিমাণে হবে তখনও জাকাত দিতে হবে। ব্যাংকে জমাকৃত যে কোনো ধরনের টাকা জাকাতের সম্পদ হিসাবে গণনায় আসবে। এমনকি ফিক্সড ডিপোজিট হলেও মূল জমাকৃত টাকার জাকাত দিতে হবে। হজের জন্য জমাকৃত টাকার জাকাত দিতে হবে। তবে হজ কর্তৃপক্ষ বা হজ এজেন্টের কাছে টাকা জমা দেওয়া হয়ে গেলে অফেরতযোগ্য টাকার জাকাত লাগবে না।
যারা শেয়ার ব্যবসা করেন তারা শেয়ারের মার্কেট ভ্যালুর ওপর জাকাত দেবেন। বীমা থেকে যখন অর্থ পাওয়া যাবে তখন বিগত বছরসহ জাকাত আদায় করতে হবে। হারিয়ে যাওয়া, চুরি বা ছিনতাই হয়ে যাওয়া সম্পদে জাকাত নেই। ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা নেই এমন ঋণেরও জাকাত নেই। তবে এসব ফেরত পেলে শুধু সংশ্লিষ্ট বছরের জাকাত দিতে হবে। বিগত বছরের জাকাত দিতে হবে না।

বাড়িওয়ালার কাছে অগ্রিম ভাড়া হিসাবে জমাকৃত টাকার, দোকানের জন্য জামানতের টাকার জাকাত দিতে হবে। ব্যবসার সম্পদের ক্ষেত্রে জাকাত গণনায় কারখানা বা দোকানের মেশিনারিজের মূল্য ধরা হয় না। এমনিভাবে দোকান বা অফিস ডেকোরেশনের জিনিসপত্রের মূল্য জাকাতের হিসাবে আসে না। এসব ক্ষেত্রে শুধু কোম্পানি, কারখানা বা দোকানের আয় জাকাতের সম্পদ হিসেবে গণ্য হবে। কারখানার কাঁচামাল যেমন প্রেসের কালি, বস্ত্রকলের তুলা-সুতার মূল্যের জাকাত দিতে হবে।

বাড়ি ভাড়া দিলে শুধু ভাড়া থেকে আয়ের ওপর জাকাত দিতে হবে। বাড়ির মূল্যের ওপর জাকাত নেই। গাড়ি ভাড়ার ব্যবসায়ীরা গাড়ি থেকে আয়ের ওপর জাকাত দেবেন। গাড়ির মূল্যের ওপর জাকাত নেই। তবে যারা গাড়ি বিক্রির ব্যবসা করেন তারা গাড়ির মূল্যের ওপর জাকাত দেবেন। এমনিভাবে ফ্ল্যাট ও প্লট ব্যবসায়ীরাও ফ্ল্যাট ও প্লটের মূল্যের ওপর জাকাত দেবেন। নিজে ব্যবহারের জন্য প্লট কেনার জন্য টাকা জমা করলে বা কিস্তি দিলে যেহেতু তখনও সেই টাকার মালিক নিজেই থাকে তাই তা জাকাতের সম্পদ হিসেবে গণ্য হবে। তবে জমি ক্রয় চূড়ান্ত হয়ে গেলে সেই জমির মূল্যের জাকাত দিতে হবে না।

মুরগির ফার্ম থেকে ডিম উৎপাদন উদ্দেশ্য হলে ডিমের মূল্যের জাকাত দিতে হবে। মুরগির মূল্যের জাকাত দিতে হবে না। মুরগি এ ক্ষেত্রে কারখানার মেশিনারিজের মতো গণ্য হবে। তবে বয়লার ফার্ম হলে যাতে মুরগির বাচ্চা বড় করা হয় তাতে উৎপাদিত-পালিত মুরগির বাচ্চার মূল্যের জাকাত দিতে হবে। ফিসারিজের জন্য ভাড়াকৃত বা ক্রয়কৃত জমি বা পুকুরের মূল্যের জাকাত দিতে হবে না। তবে বিক্রীত মাছের মূল্যের ওপর জাকাত আসবে।

যেসব ক্ষেত্রে জাকাত দিতে হয় না
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস, ব্যবহৃত কাপড়, ঘরোয়া ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র যেমন ফ্রিজ, এসি, ফ্যান, কম্পিউটার, ওভেন, ওয়াশিং মেশিন ইত্যাদি, থাকার জন্য বাড়ি, আগামী ফসল না পাওয়া পর্যন্ত পারিবারিক খাবারের জন্য জমাকৃত ধান, গম, চাল, লেখাপড়ার জন্য বইপত্র এবং কৃষি সরঞ্জামাদি যেমন ট্রাক্টর, মাড়াই মেশিন ইত্যাদিতে জাকাত ফরজ হয় না।

জাকাতের সম্পদ থেকে যা বিয়োগ হবে
ঋণের টাকায় জাকাত ওয়াজিব হয় না। বরং জাকাতের হিসাব করার সময় জাকাতযোগ্য সম্পদের হিসাব থেকে ঋণের টাকা বা সম্পদ বিয়োগ হবে। তবে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ হলে শুধু আগামী এক বছরে প্রদেয় ঋণের টাকা বিয়োগ হবে। ব্যবসার সম্পদে জাকাত হিসাব করার সময় মহাজন বা মাল সরববাহকারীকে প্রদেয় টাকা বা সম্পদ বাদ যাবে। ডায়মন্ডের অলঙ্কার ব্যবহার করলে জাকাত দিতে হয় না। তবে ডায়মন্ডের ব্যবসায়ীরা ডায়মন্ডের মূল্যের জাকাত দেবেন।

ব্যবসায়িক সম্পদে ২.৫ ভাগ জাকাত দিতে হয়। ব্যবসার উদ্দেশ্যে কোনো বস্তু ক্রয় করার পর তা ব্যক্তিগত ব্যবহারে নিলে তার জাকাত দিতে হবে না। আবার ব্যক্তিগত ব্যবহারের ইচ্ছায় ক্রয়কৃত কোনো বস্তু নিয়ে ব্যবসা করার ইচ্ছা করলেই তা ব্যবসায়িক বস্তু হবে না। যখন তা বিক্রি করবে তখনই তা ব্যবসায়িক বস্তু হিসেবে গণ্য হবে। কোনো বস্তু বা অলঙ্কার বন্ধক রেখে টাকা উঠালে বন্ধকি বস্তু জাকাতের হিসাবে আসবে না। প্রভিডেন্ট ফান্ডে যা বাধ্যতামূলকভাবে কেটে নেয়া হয়, এর জাকাত দিতে হয় না। যদি নিজের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত টাকা কাটানো হয় বা জমা রাখা হয় তাহলে অতিরিক্তের ওপর জাকাত আসবে।

একনজরে জাকাতের হিসাব দেখে নেয়া যাক- 

জাকাতের হিসাবে যা যোগ হবে
১. সোনার মূল্য
২. রুপার মূল্য
৩. নগদ টাকা
৪. ব্যাংকে জমা (ফিক্সড বা সাধারণ বা অন্যান্য)
৫. কাউকে প্রদত্ত ঋণ
৬. ব্যবসায়িক সম্পদ
৭. গ্রাহকদের কাছে যা পাওনা
৮. উৎপাদিত কৃষি ফসল (উদ্বৃত্ত)
৯. দীর্ঘমেয়াদি জমানো টাকা (হজ, বাড়ি, জমি, বিয়ে ইত্যাদির জন্য)

জাকাতের সম্পদ থেকে যা বিয়োগ হবে
১. নিত্যপ্রয়োজনীয় সাংসারিক খরচ যা পরবর্তী বেতন, ফসল, ভাতা পাওয়া পর্যন্ত লাগবে।
২. আগামী এক বছরে কোনো ব্যক্তিকে বা ব্যাংককে প্রদেয় ঋণের টাকা
৩. ব্যবসায়ীদের কাছে মাল সরবরাহকারী যা পাবে
মোট জাকাতযোগ্য সম্পদ থেকে যা বিয়োগ দেয়ার থাকে তা বিয়োগ করে মোট প্রদেয় জাকাতের সম্পদের ৪০ ভাগের ১ ভাগ বা ২.৫ ভাগ টাকা বা সম্পদ সারা বছরে জাকাত দিতে হবে।

রমজানে জাকাত আদায়
জাকাত বছরের যেকোনো সময় আদায় করা যায়। প্রয়োজনীয় সময়ে সহযোগিতা বরং উত্তম। তবে জাকাত আদায়ের জন্য আমরা সাধারণত রমজান মাসকেই বেছে নিয়ে থাকি। কারণ এ সময়ে জাকাত আদায় করলে সত্তর গুণ সাওয়াব পাওয়া যায়। লাইলাতুল কদরে হলে তো আরও অনেক বেশি। এ সময়ে হাতে নগদ টাকাও বেশি আসে, তাই জাকাত দেয়া সহজ হয়। অপরদিকে সামনে ঈদ থাকে, গরিবরাও যেন তাদের প্রাপ্য জাকাতের টাকায় সুন্দরভাবে ঈদ করতে পারে, এসব বিষয় আমাদের মাথায় থাকে।

এসবই যুক্তিসঙ্গত। এর পাশাপাশি মনে রাখতে হবে জাকাত আদায়ে যেন মানুষের কষ্ট না হয়। জাকাত প্রদানের প্রদর্শনীর কারণে স্থানে স্থানে দুর্ঘটনা, হতাহতের কথা শুনা যায়। এসব এড়িয়ে চলতে হবে। শুধু ঈদের কয়েকটা দিন তারা আনন্দে থাকুক, এতটুকুতেই সন্তুষ্ট হলে চলবে না, তারা যেন সারা বছর নিজেদের আয়ে চলতে পারে এ জন্য ক্ষুদ্র ব্যবসার কিছু ব্যবস্থা করা গেলে ভালো হয়। যদি জাকাতের একটা অংশ থেকে প্রতিবছর ২-১ জনকে স্বাবলম্বী করার চেষ্টা করা যায়, তাহলেই একসময় আরবের মতো জাকাত নেয়ার লোক পাওয়া যাবে না, পাওয়া যাবে শুধু জাকাত দেয়ার লোক।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়