ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মহান শিক্ষক দিবস পালিত

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:৫৬, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

১৮ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হলো মহান শিক্ষক দিবস। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানকালে এই দিনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রসায়ন বিভাগের শিক্ষক ড. সৈয়দ মহম্মদ শামসুজ্জোহা প্রক্টরের দায়িত্ব পালনকালে পাকিস্তানী সেনাদের গুলিতে নিহত হন। তিনিই এদেশের প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী।

দিবসের কর্মসূচি হিসেবে আজ ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনসহ অন্যান্য ভবনে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল ৭:৩০ মিনিটে উপাচার্য প্রফেসর এম আব্দুস সোবহান, উপ-উপাচার্য প্রফেসর আনন্দ কুমার সাহা, উপ-উপাচার্য প্রফেসর চৌধুরী মো. জাকারিয়া, কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান আল-আরিফ, রেজিস্ট্রার প্রফেসর মো. আবদুস সালামসহ প্রশাসনের ঊর্ধতন কর্মকর্তাগণ শহীদ ড. জোহার সমাধি ও জোহা স্মৃতিফলকে পুস্পস্তবক অর্পণ করে এক মিনিট নীরবতা পালন ও মোনাজাত করেন। এরপর রসায়ন বিভাগ ও শহীদ শামসুজ্জোহা হলসহ অন্যান্য আবাসিক হল, বিভাগ, শিক্ষক সমিতি, অফিসার সমিতি ও অন্যান্য পেশাজীবী সমিতি ও ইউনিয়ন ইত্যাদি প্রভাতফেরিসহ শহীদ জোহার সমাধি ও স্মৃতিফলকে পুস্পস্তবক অর্পণ করে।

এদিন সকাল ১০টায় শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ সিনেট ভবনে ড. জোহা স্মরণে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান আলোচক ছিলেন অর্থনীতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক, প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ও রবীন্দ্র গবেষক প্রফেসর সনৎ কুমার সাহা। উপাচার্য প্রফেসর এম আব্দুস সোবহানের সভাপতিত্বে এই আয়োজনে শিক্ষক দিবস উদযাপন কমিটির

আহ্বায়ক উপ-উপাচার্য প্রফেসর আনন্দ কুমার সাহা স্বাগত বক্তব্য রাখেন। সেখানে অন্যদের মধ্যে উপ-উপাচার্য প্রফেসর চৌধুরী মো. জাকারিয়া, কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান আল-আরিফ ও রসায়ন বিভাগের সভাপতি প্রফেসর হাসান আহমদ বক্তব্য দেন। রেজিস্ট্রার প্রফেসর মো. আবদুস সালাম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

প্রফেসর সনৎ কুমার সাহা তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘ড. জোহা মানুষ হিসেবে অনন্য ছিলেন। শিক্ষক হিসেবে ছাত্রদের সমস্ত উদ্ভাবনী ও সৃষ্টিশীল কর্মকাণ্ডে তিনি নিজেকে জড়িত রেখেছিলেন। ফুটবল, ক্রিকেটসহ সকল খেলাধুলায় তিনি ছাত্রদের সাথে যোগ দিতেন। শিক্ষক হিসেবে যে দায়িত্ব তা পালন করার জন্যই তিনি প্রতিবাদী ছাত্রদের মিছিলের সামনে নিজে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। ছাত্রদের সামনে থেকে তাদের সুরক্ষার দায়িত্বটাই তিনি সুনিপুণভাবে পালন করেছিলেন। তাঁর এ আত্মত্যাগ অবিস্মরণীয় হয়ে আছে।’

তিনি তিনি আরো বলেন, ড. জোহার আত্মদান বাঙালি জাতিকে পাকিস্তানের নিষ্পেশন থেকে মুক্তি পেতে, স্বাধিকার অর্জনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ করে। তাই আমরা দেখতে পাই জোহার আত্মদানের মধ্য দিয়ে বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন যে নতুন পর্বে প্রবেশ করে তার পথ ধরেই মুক্তিযুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে স্বাধীনতা লাভ করে।

দিবসের কর্মসূচিতে আরো ছিল সকাল ৯টায় অফিসার সমিতি, সহায়ক কর্মচারী সমিতি, সাধারণ কর্মচারী ইউনিয়ন ও পরিবহন টেকনিক্যাল কর্মচারী সমিতির নিজ নিজ কার্যালয়ে আলোচনা সভা, বাদ জোহর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে কোরআন খানি ও বিশেষ মোনাজাত, বিকেল ৪:৩০ মিনিটে ও সন্ধ্যা ৬:৩০ মিনিটে শহীদ শামসুজ্জোহা হলে যথাক্রমে দোয়া মাহ্ফিল ও প্রদীপ প্রজ্বালন, সন্ধ্যা ৭টায় রাবি শিক্ষক সমিতির শহীদ ড. জোহা স্মরণে অনলাইন আলোচনা সভা। এ দিন শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত দর্শকদের জন্য খোলা ছিল।

বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন নিজ নিজ কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করে।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়