ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন দেরি হলে কী হবে, তা এখনই ভাবা প্রয়োজন

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:০১, ১৭ মে ২০২১  

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

আগামী ৫ বা ১০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন না হল এই সঙ্কট মোকাবিলায় কী করা হবে সেটা এখনই ভাবা প্রয়োজন বলে মনে করে কক্সবাজারে কর্মরত ৫০টি স্থানীয়-জাতীয় এনজিও-সুশীল সমাজ সংগঠনের নেটওয়ার্ক (সিসিএনএফ)। সংগঠনটি বলছে, ২০২১ সালের জন্য জাতিসংঘ গৃহীত রোহিঙ্গা সাড়াদান পরিকল্পনা (জেআরপি) এ সঙ্কট মোকাবিলায় যথোপযুক্ত নয়।

রোববার (১৬ মে) বিকেলে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় এ তথ্য জানানো হয়।

সংগঠনের কো-চেয়ার ও কোস্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, এই পরিকল্পনায় স্থানীয়দের মতামত প্রতিফলিত হয়নি। গত ৪ বছর জাতিসংঘের বিদেশি কিছু কর্মকর্তার নেতৃত্বে পরিচালিত ইন্টার সেকটোরাল কো-অর্ডিনেশন গ্রুপ বা আইএসসিজি রোহিঙ্গা কর্মসূচির জন্য প্রাপ্ত তহবিলের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করতে পারেনি। প্রাপ্ত অর্থের কত অংশ স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য ব্যয় করা হয়েছে, স্থানীয় উৎস থকে কেনাকাটায় কত ব্যয় করা হয়েছে, স্থানীয়দের মধ্য হতে কতজনকে নিয়োগ করা হয়েছে এসব তথ্যও বিস্তারিত প্রকাশ করতে পারেনি।

তিনি বলেন, স্থানীয়- জাতীয় এনজিও এবং অনেক আন্তর্জাতিক এনজিওর (যেমন আইএফআরসি ও এমএসএম) কার্যক্রম, তাদের প্রাপ্ত অর্থের তথ্য জেআরপিতে অন্তর্ভুক্ত হয় না। তাই আইএসসিজি রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবিলায় কতটা কার্যকর তা প্রশ্নবিদ্ধ। তাছাড়া ভবিষ্যৎ পরিস্থিতির বিশ্লেষণ নেই জেআরপিতে। আগামী ৫ বা ১০ বছর কোন প্রত্যাবাসন না হল এই সঙ্কট মোকাবিলায় কী করা হবে সেটা এখনই ভাবা প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে অতিরিক্ত ঘনবসতি একটি বড় সমস্যা, এই সমস্যা নিরসনে সিসিএনএফ ইতোমধ্যে সহজেই স্থাপনযোগ্য দু’তলা ঘরের সুপারিশ করে আসছে। যেহেতু রোহিঙ্গাদের ৬৫% যুবক-কিশোর, তাই তাদের জন্য প্রয়োজন স্বীকৃত শিক্ষাব্যবস্থা।

সংগঠনের আরেক কো-চেয়ার আবু মোর্শেদ চৌধুরী বলন, বর্তমান রোহিঙ্গা ব্যবস্থাপনায় পৃথক তিনটি লাইন বা কর্তৃপক্ষ আছে। তারা হল আইএসসিজি, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরসিসি) এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়। কর্মসূচি এবং তহবিল ব্যবস্থাপনার জন্য একটি একক কর্তৃপক্ষ ও একক তহবিল ব্যবস্থাপনা থাকতে হবে। তিনটি সংস্থার সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠিত হওয়া উচিৎ।

ইপসার প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান বলেন, অর্থ সহায়তার স্বচ্ছতা থাকা উচিত, যেমন সিসিএনএফ সমীক্ষায় দেখা গেছ যে প্রতি রোহিঙ্গা পরিবারের জন্য প্রতি মাস ৪৮৮ ডলার আসে, কিন্তু পরিবারগুলোতে প্রত্যক্ষ সেবা ও উপকরণ পাওয়া গেছে এর এক তৃতীয়াংশের মতো অর্থাৎ ১৩০ ডলার। মোট প্রাপ্ত তহবিলের মধ্যে স্থানীয় সংস্থাগুলোর মাধ্যমে এসেছ মাত্র ৪%। ২০২১ সালের পর যেন বিদেশি কর্মীর প্রয়োজন না হয়, সে লক্ষ্যে দক্ষতা ও প্রযুক্তি হস্তান্তরের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকতে হবে।

কোস্ট ফাউন্ডেশনের যুগ্ম পরিচালক মজিবুল হক মনির বলেন, এক সমীক্ষায় দেখা গেছে ২১ হাজার শরণার্থী প্রতিদিন ৩ দশমিক ৩ টন বর্জ্য তৈরি করে। যার বেশির ভাগই প্লাস্টিক বর্জ্য। উখিয়া এবং টেকনাফ ভূগর্ভস্থ পানির নিচে নেমে যাচ্ছে। প্লাস্টিক ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা থাকা উচিত এবং গভীর নলকূপ স্থাপনও নিষিদ্ধ করতে হবে। নদীর পানি পরিশোধন করে তা সরবরাহের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে এবং পরিবেশের ক্ষতিপূরণের জন্য বিশেষ তহবিল গঠন করতে হবে।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়