ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে র‌্যাব

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:০৪, ২১ অক্টোবর ২০২১  

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন

সম্প্রতি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের জন্য দেশে-বিদেশে অপপ্রয়াস চালিয়েছে একটি চক্র। এরই মধ্যে র‌্যাবের সাইবার ইউনিট বেশ কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আইডি শনাক্ত করেছে। দেশের বাইরে থেকে গুজব যারা ছড়াচ্ছে তাদের যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী যেই হোক তার বিরুদ্ধে র‌্যাব ব্যবস্থা নেবে।

রাজধানীর কুর্মিটোলায় র‌্যাব সদর দফতরে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব কথা বলেন।

র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, দেশে ও দেশের বাইরে থেকে যেসব স্থানে বসে এ ধরনের গুজব ছড়াচ্ছে সেসব স্থানও র‌্যাব শনাক্ত করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি চক্র কুমিল্লা, নোয়াখালী, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, ফেনী ও রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্বার্থন্বেষী মহলের অপতৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়া সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের লক্ষ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উস্কানিমূলক, বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির অপচেষ্টা করছে চক্রান্তকারীরা।

আল মঈন বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউব চ্যানেল ব্যবহার করে ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করার অপচেষ্টা, উস্কানিমূলক ছবি প্রচার, ভিডিও, আপত্তিকর পোস্ট ও গুজবের মাধ্যমে বিভিন্ন অপপ্রচার ছড়িয়ে দিয়ে ফায়দা নেয়ার চেষ্টা করছে স্বার্থন্বেষী মহল। এসব অভিযোগে র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাবের বিভিন্ন ব্যাটালিয়নের অভিযানে ২২ জনকে গ্রেফতার করে এরই মধ্যে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে। এর মধ্যে- নোয়াখালীতে ইসকন মন্দিরে হামলার অভিযোগে ছয়জন, কুমিল্লা ও চাঁদপুরে গুজব ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন উস্কানিমূলক তথ্য প্রচারের অভিযোগে তিনজন, রংপুরের পীরগঞ্জে মন্দির ও সনাতন ধর্মালম্বীদের ঘরবাড়িতে নাশকতার অভিযোগে আটজন, ফেনীতে উস্কানিদাতা ও নাশকতার মূল পরিকল্পনাকারী একজনসহ চারজন হামলাকারী ও চট্টগ্রামের বাশঁখালী থেকে নাশকতার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আরো বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্বার্থন্বেষী মহল মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। বিগত বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়া নৃশংস ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ব্যবহার করে সাম্প্রতিক সময়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার লক্ষ্যে উস্কানিমূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এর মধ্যে পল্লবীর শাহীন হত্যাকাণ্ড, পার্শ্ববর্তী দেশের ত্রিপুরার পূজামণ্ডপে আগুন লাগাসহ দেড় বছর পূর্বে ঘটে যাওয়া ঘটনার ফুটেজ ব্যবহার করে অপপ্রচার ও মিথ্যাচার করছে স্বার্থন্বেষী মহল। যারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উস্কানিমূলক ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচারের মাধ্যমে অপপ্রচার চালানোর সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে র‌্যাবের সাইবার নজরদারি ও গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যে গুজব ছড়ানো ও উস্কানিদাতাদের বিরুদ্ধে র‌্যাব কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে সচেষ্ট থাকবে।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ও দেশের বাইরে থেকে কুচক্রী মহলের উস্কানি ও অপপ্রচারমূলক তথ্য ছড়ানোর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীকে জানাতে চাই, আপনারা সত্য মিথ্যা যাচাই না করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য শেয়ার, লাইক এবং কমেন্ট হতে বিরত থাকুন। পাশাপাশি র‌্যাব হুঁশিয়ার করে দিতে চায়, যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে এসব তথ্য ছড়িয়ে বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে তাদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসবে।

যে ২২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় আছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত তাদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া যায়নি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে, পরবর্তী সময়ে বিস্তারিত আরো জানানো হবে। যারা এসব কাজ করেছে তারা হিন্দু-মুসলিম কেউই করেনি। এগুলো একটি স্বার্থন্বেষী মহল করেছে। তাদের গ্রেফতারে খুবই সন্নিকটে আমরা পৌঁছে গেছি।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়