ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

স্বর্ন দিয়ে মোড়ানো বিস্ময়কর সুন্দর মসজিদ

ফিচার ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:৫৬, ২০ জানুয়ারি ২০২২  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ব্রুনাইয়ের রাজধানী বন্দর সেরি বেগাওয়ান শহরে অবস্থিত বিস্ময়কর সুন্দর এক স্থাপনা সুলতান ওমর আলী সাইফুদ্দিন মসজিদ। অসাধারণ স্থাপত্যশৈলী আর রাজকীয় প্রাচুর্যে নির্মিত এই মসজিদকে বিবেচনা করা হয়, বিশ্বের অন্যতম সুন্দর মসজিদ হিসেবে। 

এশিয়ার ছোট দেশ ব্রুনাইয়ের মর্যাদার প্রতীক এটি। দেশটির জনগণ গর্ব করে থাকেন সুলতান ওমর আলী সাইফুদ্দিন মসজিদকে নিয়ে। দেশ-বিদেশের লাখো পর্যটকের কাছেও জনপ্রিয়তা পেয়েছে এটি। মসজিদটি নির্মাণে অনুসরণ করা হয়েছে মোঘল এবং ইতালিয়ান স্থাপত্যশৈলীর মিশ্রণে। শুধু নামেই  রাজকীয় নয়, মসজিদের উপরে থাকা সবচেয়ে বড় গম্বুজের পুরোটাই সম্পূর্ণ খাঁটি সোনা দিয়ে মোড়ানো। 

রোদের আলোয় পুরো রাজধানী শহর থেকে দেখা যায় স্বর্ণ গম্বুজের ঝলমলে আলোর দ্যুতি। এই মসজিদে  সবচেয়ে সুন্দর রূপ দেখা যায় রাতের বেলায়। অন্ধকার রাতে সোনালী আলোয় সাজানো মসজিদটি দেখতে মনে হয় পুরোটা সোনায় নির্মিত, যেন সোনায় মোড়া বিশাল এক পাহাড়।

ব্রুনাই নদীর তীরে অবস্থিত একটি বিশাল লেগের কোল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে সুলতান ওমর আলী সাইফুদ্দিন মসজিদ। আশেপাশে রয়েছে অত্যন্ত সবুজ প্রকৃতির অত্যন্ত মনোরম সৌন্দর্য। রয়েছে বিশাল বিশাল ফুলের বাগান এবং কৃত্রিম ফোয়ারা। এর মাঝে স্বর্ণ গুম্বুজ রাজকীয় এই মসজিদ যেন চোখ জুড়ানো নান্দনিকতা এক স্থাপনা।

এছাড়া মসজিদের পাশেই লেগের মধ্যে স্থাপন করা হয়েছে,  শৈল্পিক ডিজাইনের রাজকীয় বজরা। পাথরের তৈরি সুন্দর একটি সিঁড়ি দিয়ে বজরাটি যুক্ত করা হয়েছে মসজিদের সঙ্গে। এই বজরায় বিভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠিত হয় পবিত্র কোরআন মাজিদের তেলাওয়াত প্রতিযোগিতায়।

ব্রুনাইয়ের পঞ্চম সুলতান বলখিয়ার রাজকীয় বহলের এই বজরা মসজিদের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুণ। লেগের দিক থেকে বজরাসহ মসজিদটি দৃশ্য দেখতে মনে হয় অপূর্বসুন্দর।

ব্রুনাইয়ের ২৮ তম শাসক সুলতান তৃতীয় ওমর আলী সাইফুদ্দিন শুরু করেছিলেন এই মসজিদের নির্মাণ কাজ। তার নামে নামকরণ করা হয়েছে এটির। ১৯৫৮  সালে শেষ হয় রাজকীয় এই মসজিদের নির্মাণ কাজ।  তখন থেকেই ব্রুনাইয়ের ইসলামী বিশ্বাসের প্রতীক হিসেবে মর্যাদা পেয়ে আসছে এটি।

 সুলতান ওমর আলী সাইফুদ্দিন মসজিদ প্রায় ১১৭ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট। এতো উচ্চতার কারণে বন্দর সেরি বেগাওয়ান শহরে যে কোনো স্থান থেকে দেখা যায় এই মসজিদটি। বিশাল লেগের এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে মসজিদের দিকে তাকালে মনে হয়, মসজিদটি যেন লেগের পানিতে ভাসছে।

উজ্জ্বল আবহাওয়াতে দিনের বেলায় ঝলমলে আলোর দ্যুতি ছড়ায় মসজিদের স্বর্ণমন্দির গম্বুজ। যা দেখে আকৃষ্ট হন দেশ-বিদেশের পর্যটকরা। আগ্রহী পর্যটকদের জন্য মসজিদের সুউচ্চ মিনারের চাড়ার ব্যবস্থাও রয়েছে।

শুধু বাইরের চাকচিক্য নয়, মসজিদের অভ্যন্তরে সাজানো হয়েছে মনমুগ্ধকর রাজকীয় ডেকোরেশন দ্বারা। মেঝে এবং দেয়ালে ব্যবহার করা হয়েছে অত্যন্ত মূল্যবান গ্রানাইড,মার্বেল ও ক্রিস্টাল পাথর। ইংল্যান্ড থেকে আমদানি করা হয়েছে সিলিং এর বিশাল ঝাড়বাতি। মেঝে ১৭ ইঞ্চি এবং জানালায় ব্যবহৃত রঙিন কাঁচ আমদানি করা হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে।

এখানে একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন প্রায় তিন হাজার মুসল্লি। অপূর্ব স্থাপত্যশৈলী আর অসাধারণ সৌন্দর্যের জন্য মসজিদটি পরিণত হয়েছে ব্রুনাইয়ের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রে। নামাজের সময় ছাড়া বোঝার উপায় নেই যে, একটি ধর্মীয় স্থাপনা। তবে নামাজের সময় মুসল্লির ছাড়া অন্য কাউকে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয় না। এছাড়া অশালীন পোশাক পরিচ্ছদ নিয়োগ বিধি নিষেধ রয়েছে মসজিদ এলাকায় অভ্যন্তরে। 

সর্বশেষ
জনপ্রিয়