ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

হবিগঞ্জে গ্রীষ্মকালীন শিম চাষে সফল দুই ভাই

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩:৫৬, ১৯ জুলাই ২০২১  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

মো. সমুজ আলী ও সনজব আলী দুই ভাই। তারা মিলে হবিগঞ্জ জেলার বাহুবলের ভুলকোট গ্রামে ৬৫ শতক জমিতে গ্রীষ্মকালীন শিম চাষ করেছেন। শিমের ফলন ভালো হয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, দুই ভাই মিলে শিম ক্ষেতে কঠোর পরিশ্রম করছেন।

এসময় আলাপ হলে তারা জানান, গাছ থেকে শিম সংগ্রহ করে বিক্রির জন্য বাজারে নিয়ে যান। পাইকারের কাছে প্রতি কেজি শিম ১০০ টাকায় বিক্রি করেন।

গ্রীষ্মকালীন সিকৃবি-১ জাতের শিম বীজ মার্চ মাসে রোপণ করেন। এই মৌসুমে তাদের প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে গাছে গাছে শিম দেখা যায়। সেই থেকে এপর্যন্ত শিম বিক্রি করে প্রায় ১৬ হাজার টাকা এসেছে। অক্টোবর পর্যন্ত শিম উৎপাদন অব্যাহত থাকার কথা। এখনো পর্যন্ত আরও ১ লাখ ১০ হাজার টাকা শিম বিক্রি থেকে আসবে বলে তারা আশা করছেন।

তারা জানান, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীমুল হক শামীমের সার্বিক পরামর্শে শিম চাষ করেন। এতে তারা সফল হয়েছেন। আর শিম নয় শুধু, একই ক্ষেতে কুমড়া ও বেগুন চাষ করেছেন। ওই দুই সবজি বিক্রি করেও অর্থ আসছে। তাদের শিম চাষ দেখে এলাকার অন্য কৃষকদের মাঝেও আগ্রহ দেখা দিয়েছে। তারাও গ্রীষ্মকালীন শিম চাষ করতে চান।

স্থানীয় কৃষক মো. সাদেক মিয়া বলেন, উপসহকারী কৃষি অফিসারের পরামর্শে প্রথম গ্রীষ্মকালীন সিকৃবি-১ জাতের শিম চাষ শুরু করেন সুমজ আলী ও সনজব আলী। শিম চাষে তারা সফলতা পেয়েছেন। পাইকাররা এ শিম প্রতিকেজি ১০০ টাকা দরে কিনে নিয়ে ১৪০ টাকায় বিক্রি করছেন। তাই এ মৌসুমে আমিও ৩০ শতক জমি আবাদ করে এ জাতের শিম চাষ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। আমি শিম বিক্রি করতে পারছি। অক্টোবর মাস পর্যন্ত শিম বিক্রি চলবে। এতে আসবে খরচের চেয়েও বেশি অর্থ।

উপজেলার দ্বিমুড়া কৃষি ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীমুল হক শামীম জানান, উপজেলার নানা এলাকায় শীতকালে বিভিন্ন জাতের শিম চাষ হলেও গ্রীষ্মকালের জন্য উপযুক্ত হচ্ছে সিকৃবি-১ জাতের শিম। এই শিম গ্রীষ্ম ও বর্ষার আবহাওয়া সহিষ্ণু। মূলত এই শিম চাষে উপজেলার ভুলকোট গ্রামে সফলতা পেয়েছেন দুই ভাই সমুজ আলী ও সনজব আলী।

তিনি বলেন, আগে এখানকার উঁচু জমিগুলোতে কৃষকরা ধানসহ নানারকম সবজির আবাদ করতেন। বর্তমানে আমার পরামর্শে একাধিক কৃষক লাভজনক সবজি গ্রীষ্মকালীন সিকৃবি-১ জাতের শিমের আবাদ করেছেন। ভালো চাষের জন্য সবসময় পরামর্শ দিয়ে থাকি। ক্ষেতে ভালো ফলন হয়েছে। তারা দামও পাচ্ছেন বেশ ভালো। ফলে আগামীবার চাষ আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শিম চাষে পোকা দমনে ইয়োলো ট্র্যাপ আর অল্প পরিমাণে সারা ও অধিক পরিমাণে গোবর ব্যবহার করেছেন কৃষকরা।

হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. তমিজ উদ্দিন খান বলেন, বাহুবলে গ্রীষ্মকালীন শিম চাষ হতো না। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীমুল হক শামীমের চেষ্টায় কৃষক সমুজ আলী ও সনজব আলী মিলে কয়েক বছর ধরে গ্রীষ্মকালীন শিম চাষ করছেন। এবার নতুন করে শিম চাষ করেছেন কৃষক সাদেক মিয়াও। ভালো ফলন হয়েছে। কৃষকরা দামও পাচ্ছেন ভালো। আর এখনো পর্যন্ত শিমে রোগ বালাই দেখা যায়নি। ভবিষ্যতে গ্রীষ্মকালীন শিম চাষ আরও বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

আরও পড়ুন
সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়