ঢাকা, বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

২২ ডিসেম্বর ১৯৭১: আজকের এই দিনে মুক্তিযুদ্ধের ঘটনা

ফিচার ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:০৫, ২২ ডিসেম্বর ২০২১  

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

বাংলাদেশ রাষ্ট্রের পরিচয়ে মাথা তুলে দাঁড়াবার চূড়ান্ত বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। সেই অনন্য অর্জন অন্যদিকে এই ডিসেম্বর স্বজন হারানোর মাস। ৩০ লাখ প্রাণ ও অসংখ্য নারীর সম্ভ্রম হারানোর বেদনা মিশে আছে এই বিজয়ের ক্ষণে।

জাতির জীবনে আবারো এসেছে বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। কোটি মানুষের হৃদয়ে এই ডিসেম্বর আসে প্রেরণা, প্রতিজ্ঞার বার্তা নিয়ে। প্রতিকূল পরিস্থিতিকে পরাজিত করে সুন্দর, সত্যের পথে লড়াইয়ের সঞ্জীবনী শক্তি লুকিয়ে রয়েছে এই ডিসেম্বরে। আজ ২২ ডিসেম্বর।

চলুন দৃষ্টি ফেরাই ১৯৭১ সালের ২২ ডিসেম্বরের দিনটিতে।

এদিন স্বাধীন বাংলাদেশের রাজধানী মুজিবনগরে প্রতিষ্ঠিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও সরকারের সাত সদস্য ভারতীয় বিমানবাহিনীর ক্যারিবু পরিবহন বিমানে করে অস্থায়ী ঢাকা এসে পৌঁছান। বিমানবন্দরে তাদের বিপুলভাবে সংবর্ধিত করা হয়। বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্রের আদর্শ বাস্তবায়নে কাজ করতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।

এ দিনে পাকিস্তানের সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর কর্মকর্তা বরখাস্ত হন। এর মধ্যে চিফ অব স্টাফ জেনারেল আবদুল হামিদ খান ও নিরাপত্তা সচিব মেজর জেনারেল আবু বকর ওসমান মিঠা, মেজর জেনারেল খোদা বখশ, মেজর জেনারেল কায়ানি ও এয়ার মার্শাল রহিমকে সেনাবাহিনী থেকে অবসর দেওয়া হয়। এছাড়া পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জুলফিকার আলী ভুট্টো নৌবাহিনীর ছয় কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেন। বেসামরিক উপদেষ্টাদের মধ্যে বরখাস্ত হন এমএম আহমেদ, মোহাম্মদ শফিক ও গিয়াসউদ্দিন আহমেদ।

বাংলাদেশে পাক হানাদার বাহিনী পরিচালিত গণহত্যার জন্য যুদ্ধাপরাধের তদন্ত শুরু করে ভারতীয় সেনাবাহিনী। বুদ্ধিজীবী হত্যা ও অন্যান্য অভিযোগে যারা অভিযুক্ত হয়েছেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন একজন জেনারেল, একজন ব্রিগেডিয়ার, তিনজন কর্নেল, দুজন মেজর ও একজন ক্যাপ্টেন। এ ছাড়া দ্বিতীয় আরেক তালিকায় ১২ অভিযুক্তের নাম রয়েছে। এ তালিকা প্রণয়ন তখনও চলছিল।

রাওয়ালপিন্ডিতে সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয় যে, শেখ মুজিবকে কারাগার থেকে মুক্তি দিয়ে গৃহবন্দি রাখা হয়েছে। এদিকে জুলফিকার আলী ভুট্টো জানান, তিনি শিগগিরই চীন সফরে যাবেন।

২২ ডিসেম্বর গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া মুক্তি দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে এ দুই থানা হানাদারমুক্ত হয়। ১৬ ডিসেম্বর দেশের বিজয় ঘোষিত হলেও গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া পাক হানাদারমুক্ত হয়েছিল ২২ ডিসেম্বর। টানা ২৮ দিন মুক্তিবাহিনী ও মুজিববাহিনীর আক্রমণের পর গৌরনদী কলেজ ক্যাম্পে অবস্থানরত শতাধিক পাকসেনা মিত্রবাহিনীর হাতে আত্মসমর্পণ করে। আর এর মধ্য দিয়ে ওইদিন এ দুই থানা হানাদারমুক্ত হয়। তবে এর আগে আগৈলঝাড়ার ছয়টি ও গৌরনদীর চারটি বধ্যভূমিতে নিরীহ বাঙালিদের হত্যা করে গণকবর দেয় পাকিস্তানি সেনারা।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়