আবারো পেছাল এসকে সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলার রায়
নিউজ ডেস্ক
এসকে সিনহা
ফারমার্স ব্যাংক (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) থেকে চার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহাসহ ১১ জনের রায়ের দিন পিছিয়ে আগামী ৯ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন।
বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক শখ নাজমুল আলম নতুন এ দিন ধার্য করেন।
এর আগে ৫ অক্টোবর রায়ের দিন ধার্য ছিল। তবে বিচারক ছুটিতে থাকায় ভারপ্রাপ্ত বিচারক ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩-এর বিচারক মোহাম্মদ আলী হোসাইন রায়ের জন্য নতুন এ দিন ধার্য করেন।
এ মামলার অপর আসামিরা হলেন- ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেডের অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হক চিশতী, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. লুৎফুল হক, সাবেক এমডি এ কে এম শামীম, সাবেক এসইভিপি গাজী সালাহউদ্দিন, টাঙ্গাইলের বাসিন্দা মো. শাহজাহান, নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাফিউদ্দিন আসকারী, রণজিৎ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী সান্ত্রী রায়।
আসামিদের মধ্যে এসকে সিনহাসহ চারজন পলাতক রয়েছে। তারা হলেন- ফারমার্স ব্যাংকের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাফিউদ্দিন আসকারী, রণজিৎ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী সান্ত্রী রায়।
এর আগে জামিনে থাকা ছয় আসামি স্বপন কুমার, লুৎফুল হক, শামীম, সালাহউদ্দিন, টাঙ্গাইলের বাসিন্দা শাহজাহান, নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা উপস্থিত হন। এছাড়া কারাগার থেকে আসামি মাহবুবুল হক চিশতীকে আদালতে হাজির করা হয়। তবে এ মামলার প্রধান আসামি সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ চার আসামি পলাতক থাকায় উপস্থিত ছিলেন না।
২০১৯ সালের ১০ জুলাই দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় মামলাটি করেন।
মামলার বিবরণে বলা হয়, ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর আসামি শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখায় দুটি অ্যাকাউন্ট খুলে দুই কোটি টাকা করে মোট চার কোটি টাকা ঋণের আবেদন করেন। তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং ঋণের আবেদনে উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর রোডের ৫১ নম্বর বাড়ির ঠিকানা ব্যবহার করা হয়, যার মালিক ছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। জামানত হিসেবে আসামি রনজিৎ চন্দ্রের স্ত্রী সান্ত্রী রায়ের নামে সাভারের ৩২ শতাংশ জমির কথা উল্লেখ করা হয় ঋণের আবেদনে। ওই দম্পতি এস কে সিনহার পূর্ব পরিচিত ও ঘনিষ্ঠ বলে উল্লেখ করা হয়। ব্যাংকটির তৎকালীন এমডি এ কে এম শামীম কোনো ধরনের যাচাই-বাছাই ছাড়াই, ব্যাংকের নিয়ম-নীতি না মেনে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঋণ দুটি অনুমোদন করেন। ওই বছরের ৭ নভেম্বর ঋণের আবেদন হওয়ার পর ‘অস্বাভাবিক দ্রুততার’ সঙ্গে তা অনুমোদন করা হয়। পরদিন মোট চার কোটি টাকার দুটি পে-অর্ডার ইস্যু করা হয় এস কে সিনহার নামে। এরপর ৯ নভেম্বর সোনালী ব্যাংকের সুপ্রিম কোর্ট শাখায় এস কে সিনহার অ্যাকাউন্টে জমা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে ক্যাশ, চেক ও পে-অর্ডারের মাধ্যমে ওই টাকা উত্তোলন করা হয়। এর মধ্যে এস কে সিনহার ভাইয়ের নামে শাহজালাল ব্যাংকের উত্তরা শাখার অ্যাকাউন্টে দুটি চেকে দুই কোটি ২৩ লাখ ৫৯ হাজার টাকা স্থানান্তর করা হয় ওই বছরের ২৮ নভেম্বর। তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ৪ ডিসেম্বর কমিশনের সভায় ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর ওই বছরের ১০ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের পরিচালক বেনজীর আহমেদ। এরপর গত বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ মামলাটির অভিযোগপত্র গ্রহণ করে ঢাকার বিশেষ জজ-৪-এ বদলির আদেশ দেন। গত বছরের ১৩ আগস্ট আদালত এসকে সিনহাসহ ১১ জনের অভিযোগ গঠন করে বিচারের আদেশ দেন। এরপর গত বছরের ১৮ আগস্ট আদালতে তাদের বিরুদ্ধে মামলার বাদী দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন সাক্ষ্য দেন। এর মধ্য দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এরপর গত ২২ আগস্ট মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের পরিচালক বেনজীর আহমেদের জেরার মধ্য দিয়ে এ সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। এ মামলায় ২১ জন সাক্ষী সবার সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। এরপর গত ১৪ সেপ্টেম্বর দুদকের আইনজীবী মীর আহমেদ আলী সালাম যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। এসময় তিনি এসকে সিনহাসহ ১১ আসামির সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দাবি করেন। দুদকের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হলে সাত আসামির পক্ষে তাদের আইনজীবী বোরহান উদ্দিন ও শাহীনুর ইসলাম যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। যুক্তিতর্ক উপস্থাপনে নির্দোষ দাবি করে আসামিদের খালাস দাবি করেন তারা। যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেন।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অবৈধভাবে ভুয়া ঋণ সৃষ্টির মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করে নগদে উত্তোলন ও বিভিন্ন পে-অর্ডারের মাধ্যমে স্থানান্তর করে অর্জিত অপরাধলব্ধ আয় উত্তোলন, স্থানান্তর ও নিজেদের ভোগদখলে রেখে অবৈধভাবে প্রকৃত উৎস, অবস্থান গোপন করে পাচার করেছেন। পাচারের ষড়যন্ত্রে সংঘবদ্ধভাবে সম্পৃক্ত থেকে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২)(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
- ‘ভার্চুয়ালের দিকে এগিয়ে না গেলে বিচার বিভাগ পিছিয়ে পড়বে’
- পাঁচ মাস পর খুলেছে উচ্চ আদালত
- মুক্তি পেলেন ১৭০ কারাবন্দী
- বিজিবির ১১৯ মুক্তিযোদ্ধার গেজেট বাতিলের প্রজ্ঞাপন স্থগিত
- পাপুলকে ২১ দিন কুয়েতের কারাগারে রাখার নির্দেশ
- হাইকোর্টে স্থায়ী নিয়োগ পেলেন ১৮ বিচারপতি
- টিকটকে অশালীন ভিডিও বন্ধে নোটিশ
- ভার্চুয়াল শুনানিতে ১৪৪ আসামির জামিন
- ধর্ষণ মামলা আপস করার ক্ষমতা ইউনিয়ন পরিষদের নেই
- গণপরিবহনে ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধির রিটের শুনানি আজ