ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা নিরসন ও গাজায় হত্যাযজ্ঞ বন্ধ চায় বাংলাদেশ : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশ যুদ্ধ নয় শান্তির পক্ষে এবং আমরা চাই, ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা নিরসনে যেসব রাষ্ট্রের ভূমিকা রাখার কথা তারা কার্যকর ভূমিকা নেয় এবং গাজায় ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞ বন্ধ হোক।

গতকাল রোববার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। সম্প্রতি দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে হামলার জবাবে শনিবার (১৩ এপ্রিল) রাতে ইসরায়েলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে কয়েকশ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ঘটনা নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েল হামলা করায় আক্রমণের সুযোগ পেয়েছে ইরান। অন্যথায় এটি হতো না, ইরান ‘রিটালিয়েট' করেছে, ইরানের বক্তব্যও তাই।

তিনি বলেন, আমরা আশা করবো, যেসব রাষ্ট্রের ভূমিকা রাখার কথা তারা ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা নিরসনে এবং গাজায় হত্যাযজ্ঞ বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে। আমরা কখনই যুদ্ধের পক্ষে নই, আমরা শান্তির পক্ষে।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নে অপহৃত বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ উদ্ধারের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকার ও সংশ্লিষ্টদের সর্বাত্মক তৎপরতায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে জিম্মি নাবিক ও জাহাজ নিরাপদে উদ্ধার হয়েছে। জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দিকে ১০০ নটিক্যাল মাইল এগিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর সহযাত্রী হয়েছে। কেএসআরঅএম গ্রুপকেও ধন্যবাদ দিই, তারাও অত্যন্ত সক্রিয় ছিল।

এ সময় দক্ষিণ সীমান্তে মিয়ানমারের আরও ৯ বিজিপি সদস্যের দেশে প্রবেশ নিয়ে মন্ত্রী বলেন, আগের ১৮০ জনসহ সবাইকে ফেরত পাঠানো নিয়ে কাজ চলছে, মিয়ানমার নৌপথের কথা বলেছে।

হাছান মাহমুদের সঙ্গে অ্যান্টিগা ও বার্বুডার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ :
রোববার বিকেলে রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন পাঁচদিনের বাংলাদেশ সফরে আসা অ্যান্টিগা ও বার্বুডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ই পি শেত গ্রিন।

বৈঠক বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কোন্নয়ন ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতার নানা দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তাদের পর্যটন খাত অত্যন্ত উন্নত। আমাদের পর্যটন বিভাগের সঙ্গে ‘টেকনিকাল কো-অপারেশনের’ মাধ্যমে এ খাতে প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ সহযোগিতার সম্ভাবনার কথা হয়েছে।

হাছান বলেন, বাংলাদেশের ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা-ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের ১৪০টি দেশে রপ্তানি হয়। তাদেরও তা আমদানির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তৈরি পোশাক, সিরামিক, চামড়াজাত পণ্য এ দেশ থেকে আমদানির কথা আলোচনা করেছি।

অ্যান্টিগা ও বার্বুডার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাংবাদিকদের কাছে তাদের দেশের বিশ্বখ্যাত ক্রিকেটার ভিভিয়ান রিচার্ডসের বাংলাদেশ সফরের সম্ভাবনার কথা জানান।

মন্ত্রী গ্রিনের সঙ্গে দেশি শিল্পগ্রুপ পিএইচপি ফ্যামিলির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম এবং অ্যান্টিগা ও বার্বুডার কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী নেতা এবং দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকা উইংয়ের মহাপরিচালক খন্দকার মাসুদুল আলম, মন্ত্রীর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মীর আকরাম উদ্দীন আহম্মদসহ পদস্থ কর্মকর্তারা বৈঠকে যোগ দেন।অ্যান্টিগা ও বার্বুডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বৃহস্পতিবার ঢাকা ত্যাগের আগে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু ও এফবিসিসিআই প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি ঢাকা ও চট্টগ্রামে বিভিন্ন শিল্প স্থাপনা পরিদর্শন করার কথা রয়েছে।