ঢাকা, শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

বিএনপি খাই খাই পার্টি : প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৫৭, ১৯ মার্চ ২০২৪  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

পবিত্র রমজান মাসে ইফতার পার্টি না করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের জন্য কাজ করছে আর বিএনপি ইফতার পার্টির নামে নিজেরা ভোগবিলাসে ব্যস্ত রয়েছে, উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এটাই হচ্ছে দুই দলের মধ্যে তফাৎ।’

গতকাল সোমবার (১৮ মার্চ) দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস ২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার তো সাধারণ মানুষকে ইফতার বিলি করি। আর তোমরা ইফতার খাও, তোমরা খেতে জানো, তোমরা হচ্ছো খাই খাই। আর আওয়ামী লীগ দেয়। এটাই হচ্ছে তফাৎ। আমরা জনগণের সাথে কাজ করি, জনগণের সাথে কাজ করব।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ দেয়, দিতে জানে, আর সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ায়। যারা প্রতিনিয়ত আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে হটাবে, উৎখাত করবে, নির্বাচন হতে দেবে না, মানুষ খুন করে, অগ্নিসন্ত্রাস করে; এখন তারা কিন্তু কোনো মানুষকে ইফতার দেয় না, নিজেরা ইফতার পার্টি খায়। ইফতার পার্টিতে গিয়েও আল্লাহ-রাসুলের নাম না নিয়ে আওয়ামী লীগের গীবত গায়। নিজেরা ইফতার খায়, আওয়ামী লীগের গীবত গায়। আর কবে আওয়ামী লীগকে উৎখাত করবে, সেটাই দেখে।’

তিনি বলেন, আমরা ইফতার পার্টি করব না, এই খাবার সাধারণ মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দেবো। সারা বাংলাদেশে একমাত্র আওয়ামী লীগ এবং আমাদের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও আমাদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা সাধারণ মানুষের মাঝে ইফতার বিলি করছেন।

‘আপনারা খেয়ে-দেয়ে মাইক একটা লাগিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করবেন। আওয়ামী লীগের অপরাধটা কী? এ দেশ স্বাধীন করেছে, সেটা অপরাধ? আওয়ামী লীগের অপরাধ কী? গরিব মানুষের পাশে দাঁড়ায়, দেশটা আজ উন্নত করেছে, সেটাই কি অপরাধ? তারা যে গণতন্ত্রের কথা বলে, আমরা কিন্তু সেই  গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি যেখানে ডাল-ভাতের ওয়াদা করে ব্যর্থ হয়েছিল, এর পর একজন এসে আলু খেতে বলল।  আলু উৎপাদনও সেভাবে করতে পারেনি। সেখানে আওয়ামী লীগের আমলে অন্তত ভাতের কষ্ট নেই, এটা আমরা বলতে পারি। এখন জিনিসের দাম নিয়ে মানুষ বলছে, মুরগির দাম বাড়ল কেন, পেঁয়াজের দাম বাড়ল কেন, চিনির দাম বাড়ল কেন, তেলের দাম বাড়ল কেন? এক সময় দেশের মানুষ নুন-ভাতের কথাই চিন্তা করত। সেটুকু জোগাড় করতে পারত না। এখন সেই অবস্থা আওয়ামী লীগ পরিবর্তন করতে পেরেছে।

খাদ্যশস্য, দানাদার শস্য উৎপাদন চার গুণ বৃদ্ধির কথা জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন,  আমরা ইলিশ মাছের উৎপাদন আড়াই গুণ বৃদ্ধি করেছি। গবাদি পশুর উৎপাদন দুই গুণ বৃদ্ধি হয়েছে। পোল্ট্রি চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ৭ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে দুধের উৎপাদন। প্রত্যেকটা জিনিসের উৎপাদন আমরা বৃদ্ধি করেছি। মাংসের দাম বেড়ে গেছে, তবে আট গুণ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে বাংলাদেশে।

গণতন্ত্র নিয়ে বিএনপির বক্তব্যের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতাকে হত্যা করার পর নিজেই নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে ক্ষমতায় বসে জিয়াউর রহমান। ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে যে দলের সৃষ্টি, কোন গণতান্ত্রিক ধারা দিয়ে সে দল তৈরি হয়েছে? এটা কোনো গণতন্ত্রের মধ্য দিয়ে হয়নি, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের হাত দিয়ে হয়েছে। তারা আবার গণতন্ত্রের ভাষা বোঝে ? গণতন্ত্রের অর্থ বোঝে? গণতন্ত্র বানান করতে পারে? সেটাই আমার প্রশ্ন। আপনার জিজ্ঞেস করেন, গণতন্ত্র বানান করতে পারে কি না। সেটাও তারা বুঝবে না। তারা তোতা পাখির মতো বলে যাচ্ছে, গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করে।

তিনি বলেন, এ দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ, গণতন্ত্র দিয়েছে আওয়ামী লীগ। গণতন্ত্র চর্চা করে আওয়ামী লীগ—দলের ভেতরে এবং দেশে। আজকে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার আছে বলেই কথা বলতে পারে।

‘এই যে এতগুলো টেলিভিশন কে দিয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকার। তারা তো দেয় নাই। একটাই টেলিভিশন ছিল, একটাই রেডিও ছিল, তারা নিজেরাই ব্যবহার করত। নামমাত্র কয়েকটা পত্রিকা ছিল। আর আজকে হাজার হাজার পত্রিকা। প্রায় অর্ধশত টেলিভিশন, রেডিও আমাদের হয়ে গেছে। যার যা ইচ্ছা, টকশো করছে, কথা বলে যাচ্ছে। সব কথা বলেও যদি বলে যে, কথা বলতে পারি না, তাহলে কোথায় যাব আমরা?’

আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন—আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, ডা. দীপু মনি, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মেরিনা জাহান কবিতা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়