ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর খবর যে কারণে সাড়ে ৩ মাস গোপন ছিল!

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৩১, ১৩ জানুয়ারি ২০২২  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে তারেক রহমানের নেতৃত্বে গঠিত মাফিয়া সাম্রাজ্য ‘হাওয়া ভবন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে লোপাট এবং গোপনে বিদেশে পাচার করে খোদ বিএনপির হাইকমান্ডের অগোচরে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া আবুল হারিছ চৌধুরী লন্ডনের একটি হাসপাতালে মারা গেছেন।

তিনি করোনায় ভুগছিলেন। গত বছর আগস্টে করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থও হয়েছিলেন।

তবে করোনায় ফুসফুসের মারাত্মক ক্ষতি হওয়ায় আবার তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। তিনি আগে থেকেই ব্লাড ক্যান্সার ও অন্যান্য জটিলতায় ভুগছিলেন।

হারিছ চৌধুরীর চাচাতো ভাই সিলেট জেলা বিএনপির সহসভাপতি আশিক চৌধুরী এ তথ্য দেন।

পরিবার জানায়, হারিছের মৃত্যু হয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ মাস আগে। তবে পরিবারের সদস্যরা সংবাদটি এত দিন গোপন রেখেছিলেন।

এই গোপন রাখার বিষয়ে বিএনপির একটি সূত্রের দাবি, সাড়ে ৩ মাস ধরে হারিছ চৌধুরীর পাচারকৃত বিপুল অর্থ সম্পদের বিলি বন্টনের কাজ সমাধা করে এবং যুক্তরাজ্য ছাড়া বিভিন্ন দেশে রেখে যাওয়া সম্পদ ও অন্যান্য বিষয়-আশয়ের একটি সুরাহা করেছে পরিবার।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার যেন টের না পায় সেজন্যই হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর খবর গোপন রাখা হয়েছিল। কারণ, সরকার টের পেলে অবৈধ সম্পদ ফিরিয়ে আনার জোর চেষ্টা চালাতে পারে, এমন শঙ্কা ছিল পরিবারের।

এদিকে গতকাল আশিক চৌধুরী ফেসবুকে ইঙ্গিতপূর্ণ একটি স্ট্যাটাস দিলে হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর বিষয়টি চাউর হয়ে যায়। ফেসবুকে স্ট্যাটাসে লেখা ছিল- ‘ভাই বড় ধন, রক্তের বাঁধন’। হারিছের একটি ছবি যুক্ত করে আশিক এ স্ট্যাটাস দেন।

স্ট্যাটাসের নিচে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা ‘ইন্না লিল্লাহি … রাজিউন’ লিখে কমেন্ট দিতে থাকেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এবং দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে একসাথে হত্যার উদ্দেশ্যে চালানো ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলায় ২০১৮ সালে যাবজ্জীবন সাজা হয় হারিছ চৌধুরীর। একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হারিছ চৌধুরীর ৭ বছরের জেল ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা হয়।

এ ছাড়া সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলায় হারিছ চৌধুরী ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

২০০৭ সালে দেশে জরুরি অবস্থা জারির পর হারিছ চৌধুরী সস্ত্রীক তার গ্রামের বাড়ি সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দর্পনগরে আসেন। রাত ১২টার পর তার ব্যক্তিগত সহকারী আতিক মোবাইল ফোনে জানান, ঢাকায় বিএনপি নেতাদের বাসভবনে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলছে।

কয়েক ঘণ্টা পর যৌথ বাহিনী হারিছের বাড়িতে হানা দেয়। কিন্তু তার আগেই তিনি সরে পড়েছিলেন। তিনি এভাবে নিরুদ্দেশ হয়ে যাবেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারাও টের পাননি।

এরপর কিছুদিন সিলেটে এখানে-ওখানে লুকিয়ে থাকার পর ওই বছরের ২৯ জানুয়ারি জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে রাতের আঁধারে ভারতে চলে যান। ভারতের আসামে করিমগঞ্জ জেলার বদরপুরে তার নানাবাড়ি। সেখানেই তিনি ওঠেন।

সেখান থেকেই বিদেশে যাতায়াত করতেন। সূত্র জানায়, ব্যবসা-বাণিজ্যও দেখভাল করতেন ওখানে থেকেই।হারিছ চৌধুরী স্ত্রী ও ছেলেমেয়ে নিয়ে যুক্তরাজ্যে থাকতেন। তার ছেলে জনি চৌধুরী পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার। মেয়ে মুন্নু চৌধুরী ব্যারিস্টার।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়